নাশকতা ও বিস্ফোরক দ্রব্য মামলার আসামী কুষ্টিয়ার ঐতিয্যবাহি কুষ্টিয়া হাই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল আলীম। স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাবানা ইয়াসমিনের আশ্রয়ে স্কুল কোয়ার্টার ব্যবহার করে নাশকতার নতুন পরিকল্পনা করছে বলে জানা গেছে।
জানা যায়, চলতি মাসের ৫ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে, কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জিয়ারখি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কুষ্টিয়া হাই স্কুলের ক্রীড়া শিক্ষক আব্দুল আলীম সহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ৭৬ জন নেতাকর্মীসহ অজ্ঞাত ৩৫-৪০ জন সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করে গুরুতর রক্তাক্ত করত ভীতি প্রদর্শন ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ ঘটনায় আহত তামিমের মা ফারজানা ইয়াসমিন বাদি হয়ে ২০/০৮/২৪ তারিখে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলা দায়ের করে। মামলা নং ১৮/৩২০ মামলার অন্যান্য আসামীদের মধ্যে রয়েছে কুষ্টিয়া পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শেখ আহমেদ কৌশিক ওরফে বিচ্চু, হরিপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মিলন মন্ডল, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বিপ্লব, আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদ হাসান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি) আফরোজা আক্তার ডিউ, ইসরাত জাহান প্রকৃতি, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারন সম্পাদক মানব চাকি, ওলিদুজ্জামান শুভ, যুবলীগ নেতা হাসিব কুরাইশি, জেলা আওয়ামী লীগ নেত্ হাসানুল আসকার হাসু, ইমরান হোসেন দোলন, জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেন্জ, রাকিবুল ইসলাম রাকিব, সালমান রাজু, জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ অজয় সুরেকা, ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক রনি খান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জেবুন্নেসা সবুজসহ ৭৬ জন।
উক্ত মামলা ও কুষ্টিয়া হাইস্কুলের কোয়ার্টার ব্যবহার করে, আসামী আব্দুল আলীমসহ অন্যান্যদের নতুন করে নাশকতা সৃষ্টির চেষ্টার বিষয়ে কুষ্টিয়া হাই স্কুলের প্রধান শাবানা ইয়াসমিন বলেন, "আমি উনার বিরুদ্ধে মামলার বিষয় শুনেছি, মামলার পর থেকে তিনি পলাতক আছেন, স্কুলে আসছেন না। আমাদের স্কুল পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ছিলেন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামীলীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: একেএম মুনির। তিনি এখন নাই। বর্তমানে সভাপতি ডিসি স্যার। নতুন ডিসি স্যার আসলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি আরো বলেন স্কুলের কোয়াটারে আব্দুল আলীম থাকেন, তবে কোয়ার্টার ব্যবহার করে সরকার ও শিক্ষার্থী বিরোধী কোন নাশকতা হলে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।"
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আমিরুল ইসলাম বলেন, "এ বিষয়ে এখনও আমাদের কেউ জানায়নি। বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষ জানালে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব। মামলার বিষয়টিসহ ঐ শিক্ষক বিষয়ে আমরাও খোঁজ নিব।"
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুষ্টিয়া হাই স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, আব্দুল আলিম হালিম ক্রীড়া শিক্ষক হলেও কোন ক্লাস নেন না, ক্রীড়ার কোন উন্নতি নেই, উনি রাজনীতি নিয়ে ব্যস্ত থাকেন, দাপটের সাথে চলেন। তিনি আরো বলেন দুদক মামলার আসামী সাবেক প্রধান শিক্ষক খলিলুর রহমান এর খুব কাছের লোক ছিলেন এই হালিম। স্কুল মার্কেটে তার ২১ টি দোকান আছে, স্কুল কোয়াটারের যে ফ্লাটে খলিল স্যার থাকতেন হালিম এখন সেখানে থাকেন। শাবানা ম্যাডাম এর সাথেও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকায় যা ইচ্ছা তাই করেন।
কুষ্টিয়া হাই স্কুলের শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা দাবি করেন। বৈষম্য বিরোধী শিক্ষার্থী আন্দোলনের বিরোধিতাকারী নাশকতা মামলার আসামী এমন শিক্ষক আমাদের স্কুলে থাকতে পারেন না। আমরা তাকে বরখাস্তের দাবি করছি।