ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে দেশে প্রায় এক কোটির মতো গ্রাহক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এরমধ্যে প্রায় ৮৭ লাখ গ্রাহকই বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি)। এই বিতরণ কোম্পানির অধীন প্রায় ২৫ জেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ এই মুহূর্তে বন্ধ আছে। আর বাকি গ্রাহক ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) এবং বাংলাদেশ বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (পিডিবি)। ঝড়ের প্রভাব বাড়তে শুরু করলে রাতের মধ্যে এই সংখ্যা আরও বেড়ে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো।
আরইবি জানায়, ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করার আগে সোমবার সকালেই দেশের সাতটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তারা। রাতে সব মিলিয়ে বন্ধ করা হয় ৩১টি সমিতির বিদ্যুৎ সরবরাহ। এই সমিতিগুলোর মোট গ্রাহক সংখ্যা ৮৭ লাখ ৪১ হাজার।
আরইবি সদস্য আমজাদ হোসেন বলেন, সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী আমাদের প্রায় ৮৭ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎ সরবরাহের বাইরে রয়েছে। ইতোমধ্যে উপকূলীয় এলাকাগুলোতে ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ঝড়ো হাওয়ার প্রভাবে অনেক স্থানে গাছ পড়ে সরবরাহ লাইন ছিঁড়ে গেছে, পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ঝড়ো হাওয়ার কারণে মেরামতের কাজ করা সম্ভব হচ্ছে না।
অন্যদিকে ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (ওজোপাডিকো) জানায়, বিকাল নাগাদ ঝড়ের প্রভাব পড়তে শুরু করার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের পাঁচ জেলায় একেবারেই বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়৷ জেলাগুলো হচ্ছে—বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, নড়াইল এবং মাগুরা। ওয়েস্টজোনের সব মিলিয়ে গ্রাহক সংখ্যা প্রায় ১৪ লাখের কাছাকাছি। এরমধ্যে এক তৃতীয়াংশ গ্রাহক উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে।
ওজোপাডিকো’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. আজহারুল ইসলাম জানান, আমাদের পাঁচ জেলায় এখন বিদ্যুৎ নেই। এসব জেলার মধ্যে চারটিতে ৩৩ কেভি লাইনে সমস্যার কারণে বিদ্যুৎ নেই। ঝড় শেষ না হলে এগুলো মেরামত করা কঠিন হবে। অন্যদিকে গ্রিড ট্রান্সফরমারে সমস্যার কারণে মাগুরাতে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
এদিকে পিডিবি চট্টগ্রাম সূত্র জানায়, ভোলায় ঝড়ের প্রভাব বেশি হওয়াতে ভোলা বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে ভোলায় বিদ্যুৎ সরবরাহও বন্ধ আছে। এছাড়া চট্টগ্রাম পিডিবির অধীন বেশ কিছু এলাকায় ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।