ঢাকা, রবিবার ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৬ই আশ্বিন ১৪৩১

চুরির ঘটনা জমিজমার বিরোধে রূপান্তর! পুলিশী হেফাজতে মৃত্যুর ঘটনায় হত্যা মামলা

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৩ এপ্রিল ২০২২ ১২:৫৫:০০ পূর্বাহ্ন | দেশের খবর
চুরির ঘটনা হয়ে গেলো জমি-জমার বিরোধ! আবার চুরির ঘটনায় ধৃত চোরসহ গৃহকর্তাকেও আনা হয় থানায়। পরে পুলিশ হেফাজতেই মৃত্যু ঘটে ওই গৃহকর্তা ব্যবসায়ী নজির আহমদের। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার। পুলিশী হেফাজতে ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় ১৩ জনের বিরুদ্ধে হয়েছে হত্যা মামলা। ধৃত চোর হয়ে গেলো হত্যা মামলার আসামী! এসব নিয়ে এলাকায় ধূম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে।
 
 
শুক্রবার (২২ এপ্রিল) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্ত শেষে নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসায়ীর বাড়িতে চোর আটকের খবরে পুলিশ গিয়ে ধৃত চোরসহ গৃহকর্তাকে থানায় নিয়ে আসে। পরে পুলিশী হেফাজতেই মৃত্যু ঘটে জেলার সরাইল উপজেলা সদরের নিজ সরাইল গ্রামের মাওলানা ওবায়দুল্লাহর পুত্র নজির আহমেদের (৪০)। এই ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করেন হত্যা মামলা এবং এজাহারনামীয় আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখানো হয় চোর হিসেবে আটককৃত জুম্মানকে।
 
 
সরাইল থানা পুলিশ জানায়, নজির আহমেদের বাড়িতে চুরি হওয়ায় বৃহস্পতিবার রাতে এক চোরকে আটকে মারধর করে।খবর পেয়ে পুলিশ নিজসরাইল গ্রামে গিয়ে নজির আহমেদসহ চোরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। সুত্র জানায়, পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় বৃহস্পতিবার রাতে ব্যবসায়ী নজির আহমেদ মারা যায়। এই ঘটনায় নিহতের ভাই মো. জাফর আহমেদ বাদী হয়ে তাদের প্রতিপক্ষীয় ১৩ জনকে আসামী করে সরাইল থানায় দায়ের করেন। এই ঘটনায় পুলিশ গ্রেপ্তার দেখায় চোর হিসেবে আটককৃত নিজসরাইল গ্রামের হেলাল মিয়ার পুত্র জুম্মান মিয়াকে। নিহতের লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুতের পর ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে। শুক্রবার দুপুরে ময়না তদন্তের পর মরদেহ স্বজনদের মাঝে হস্তান্তর করা হয়। এই ঘটনায় নিহতের ভাই বাদী হয়ে ১৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ একজনকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে।
 
 
এদিকে শুক্রবার সকালে সরাইল থানা পুলিশ সূত্র জানায়, প্রতিবেশীর সঙ্গে জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিলো নিজসরাইল গ্রামের মাওলানা ওবায়দুল্লাহ্'র পুত্র নজির আহমদের। এরই জেরে নজিরকে প্রহার করে প্রতিপক্ষীয়রা। বৃহস্পতিবার রাতে তাকে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রতিপক্ষের শারিরিক-মানসিক অত্যাচারের জেরেই থানায় আনার পর অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিকৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বৃস্পতিবার রাতে অবশ্য সরাইল থানার ওসি আসলাম হোসেন জানান, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সে মারা গেছে। 
 
 
 
সরাইল থানার পরিদর্শক (ওসি) আসলাম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রথমে চোর হিসেবে আটককৃত জুম্মান মিয়া নামের একজনকে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামী হিসেবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সিসিটিভির ফুটেজসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়েছে।'