ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ছেলেকে উদ্ধারে গিয়ে আনসারদের বেধড়ক পিটুনিতে গুরুতর জখম শাহিন মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৩:৪৩:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

সচিবালয়ের সামনে গত ২৫ আগস্ট রাতে আনসার সদস্যদের বেধড়ক পিটুনিতে মারাত্মক জখম হওয়া এক ব্যক্তি চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে মারা গেছেন।

 

তার নাম মো. শাহিন হাওলাদার, বয়স ৪৫ বছর।

 

পেশায় গাড়িচালক। বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সকালে ঢামেক হাসপাতালের আইসিইউতে মারা যান তিনি।

শাহিনের বাড়ি খুলনা বিভাগের মোংলা থানার কচুবুনিয়া গ্রামে। বাবার নাম সোবহান হাওলাদার। দুই ছেলে ও এক মেয়েসহ পরিবার নিয়ে থাকতেন খিলগাঁওয়ের গোড়ানের ৩০ নম্বর রোডের একটি বাসায়।

 

হাসপাতালের মর্গে তার ছেলে হাসান আহমেদ বিশাল জানান, বিশাল ও তার বন্ধুরা ছাত্র আন্দোলনের প্রথম থেকেই রাজপথে ছিলেন। গত ২৫ আগস্ট সাধারণ আনসার সদস্যরা যখন সচিবালয় ঘেরাও করেন, পরে সেখানে শিক্ষার্থীরা উপস্থিত হলে তাদের ওপর হামলা করে আনসাররা। এটি শুনে তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে সচিবালায় সামনে গিয়েছিলেন। রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের দুই পাশে আনসার সদস্যরা অবস্থান নিলে মাঝখানে আটকা পড়েন তারা। তখন সেখান থেকে বের হওয়ার জন্য গাড়ি চালক বাবাকে ফোন দেন বিশাল। তাদের সেখান থেকে উদ্ধার করতে বলেন।  

 

ছেলে ও তার বন্ধুদের ফোনকল পেয়ে সেখানে গিয়েছিলেন শাহিন হাওলাদার। সচিবালয়ের সামনে দিয়ে হেটে ছেলেকে খুঁজছিলেন তিনি। তখন আনসার সদস্যরা লাঠি দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটাতে থাকে তাকে। তার মাথার পেছনে আঘাত করে।

 

বিশাল জানান, অনেকক্ষণ পর তার বাবার ফোনে কল করলে তখন এক শিক্ষার্থী ফোন রিসিভ করে জানান, আনসার সদস্যরা তার বাবাকে আঘাত করেছে। সঙ্গে সঙ্গে বাবার কাছে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে ওই রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যান। ভর্তি করেন হাসপাতালের আইসিইউতে। সেখানে তার মাথায় অস্ত্রোপচার হয়। রাখা হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ সকালে মারা যান শাহিন।  

 

বিশালের বন্ধু রমজান হাওলাদার বলেন, আমার বন্ধুর বাবা মূলত আমাদের সেদিন সচিবালয়ের সামনে থেকে আনার জন্য গিয়েছিলেন। তবে সেখানে আমাদের খুঁজে পাচ্ছিলেন না। এসময় আনসার সদস্যরা শিক্ষার্থী মনে করে তাকেও পিটিয়ে আহত করে। তাকে পেটানোর সেই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওর মধ্যেও তাকে মারধর করতে দেখা গেছে। আমরা এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

 

শাহবাগ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সানাউল হক জানান, পরিবারের আবেদনে শাহিন হাওলাদারের মরদেহটি ময়নাতদন্ত ছাড়া স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।

 

তবে এই ঘটনায় একটি ‘অপমৃত্যু’র মামলা দায়ের হয়েছে বলে জানান এসআই।