যশোরের ঝিকরগাছায় সখের বসে গ্রীষ্মকালীন ফসল হলেও বারোমাসি হিসেবে মাচা পদ্ধতিতে তরমুজ ও করলা উচ্ছে চাষ। এতে স্বাবলম্বী হচ্ছেন পানিসারা ইউনিয়নের পানিসারা গ্রামের মৃত নবিছদ্দীনের ছেলে কৃষক মোঃ কামরুজ্জামান। তিনি পেশায় খুলনা বিভাগীয় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের গবেষনা কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত। কৃষি বিভাগের পরামর্শক্রমে নতুন জাতের এ তরমুজ চাষ করে ভালো ফলন হওয়ায় তার দেখা দেখি অনেকেই এগিয়ে আসছেন তরমুজ চাষে। নিজের অর্থায়নে খুলনা হতে একটি দোকান হতে বীজ ক্রয় করে নিয়ে এসে তার ১বিঘার জমির মধ্যে ২০শতক জমিতে মাচা পদ্ধতিতে চাষ হচ্ছে কালো রঙের তরমুজ। এছাড়াও অপর ১৩শতক জমিতে চাষ হচ্ছে করলা উচ্ছে, কাচা মরিচ, বেগুন, ঢেঁড়স ও ওল। এছাড়াও বাড়ির উঠানের পাশে বস্তায় চাষ করছেন মসলা জাতীয় ফসল আদা। প্রতিটি কালো রঙের তরমুজের ওজন গড়ে ২.৫ থেকে ৩.৫ কেজি। সাইজে ছোট হওয়ায় সকলের ক্রয় ক্ষমতার নাগালে থাকে। এই তরমুজ খেতে অনেক সুস্বাদু ও পুষ্টিকর। আর এই তরমুজ চাষে ব্যবহৃত হচ্ছে মালচিং পেপার। এই পেপারে ফসল চাষ করলে মাটির আর্দ্রতা ঠিকঠাক থাকে, জমিতে আগাছা হয় না এবং রোগবালাইও তুলনামূলক কম হয়। ব্ল্যাক গোল্ড হাইব্রিড জাতের রঙিন তরমুজ চাষের ফলে বোঁটা থেকে মাটিতে ছিঁড়ে না পড়ে এ কারণে তরমুজগুলো জাল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে পাইকাররা এসে ভিড় জমাচ্ছেন কামরুজ্জামানের বাগানে। তার দেখাদেখি এলাকার অন্য কৃষকরাও এ জাতীয় তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
কৃষক মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, আমার চাকরির পাশাপশি সখের বসত কৃষি কাজ করি। তারই ধরাবাহিকতায় আমি প্রথমে ইউটিউবে দেখে তরমুজ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠি। এরপর কৃষি বিভাগের পরামর্শে খুলনার বাজার থেকে বীজ সংগ্রহ করে তা রোপণ করি। অল্প পরিশ্রমে বেশি ফলন ও ভালো দাম পেয়ে এ চাষে আমার আরও উৎসাহ বাড়েছে। তরমুজ চাষে গোবর, ডিএপি সার, পটাশ, জিপসাম, সেচ, বাঁশ, সুতা, বিষ ও লেবারসহ খরচ হয়েছে প্রায় ৩০-৩৫ হাজার টাকা। ২.৫ থেকে ৩.৫ কেজি ওজনের প্রায় ২ হাজার তরমুজ ধরেছে। বর্তমান এক চালান বাজারে বিক্রি করেছি। বর্তমানে বাজার মূল্য চলছে ১হাজার ৬শত টাকা মন। এতে সব খরচ বাদ দিয়ে আমার অনেক টাকা আয় হবে বলে আমি আশাবাদি। এছাড়াও আমি যদি স্থানীয় কৃষি অফিসের সহযোগিতা ও বিএডিতি’র পলি সেড পায় তাহলে আমার চাষের আকার বৃদ্ধি করতে পারবো। উপজেলা কৃষি অফিসারের কার্যালয়ের পানিসারা ব্লকের (অতিরিক্ত) উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জনাব অর্ধেন্দু কুমার পাঁড়ে বলেন, আমি কৃষকের সাথে যোগাযোগ করে আমার মত করে পরামর্শ দিয়েছি। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, আমাদের এই উপজেলাতে প্রায় ২ হেক্টর জমিতে ব্ল্যাক গোল্ড হাইব্রিড জাতের রঙিন তরমুজ চাষ হয়। কিছুদিন আগে প্রচুর বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমাদের একটু সমস্যা হয়েছে। তবে আমাদের এলাকায় বেলেদশ মাটি হওয়ার করণে ইতিমধ্যে অনেকটা কেটে উঠেছে। আমরা তরমুজের যে ফল আশা কারেছিলাম। আমাদের কাঙ্খিত আশা পূরণ হচ্ছে। কৃষকদের চাহিদা মোতাবেক ভালো দাম পাচ্ছে ও সাইজে ছোট ও সুস্বাধু হওয়ায় সকলে তাদের চাহিদা মোতাকেব ক্রয় করছে।