যশোরের ঝিকরগাছা পৌর সদরের অন্তগত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স বা পদ্মপুকুর হাসপাতাল নামে পরিচিত থাকলেও এই হসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে নিজ উপজেলা সহ পর্শ্বতর্বী মনিরামপুর ও শার্শা উপজেলার জনসাধারণ। পূর্বে এই হাসপাতাল নিয়ে ভালো সুনাম থাকলেও বর্তমানে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের দুর্ব্যবহার ও লিখিত আবেদন ব্যতিত ছুটির কবলে পড়ে ভোগান্তির স্বিকার হয়ে চিকিৎসা না নিয়ে ঘরে ফিরছে অসহায় সাধারণ রোগীরা। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কোন অসহায় রোগী ভর্তি হলে তাদের ঔষধ কেনার টাকা পকেটে না থাকলেও উপরের নার্সদের রুম থেকে টোকেন ধরিয়ে দিয়ে বলা হয় আমাদের এখানে সাপ্লাই নেই বাহির থেকে কিনে আনেন বলে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এছাড়াও হাসপাতালের সামনে থাকা একাধিক ক্লিনিকের প্রতিনিধিরা সর্বদা হাসপাতালের ভিতরে ও ডাক্তারের রুমের সামনে বসে থাকতে দেখা যায়। আর এই বিষয়ে সর্বদা হাসপাতাল কর্র্তৃপক্ষের নিরব ভূমিকা নিতে দেখা যায়। তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সকালে ডাক্তারদের উপস্থিত হওয়ার পূর্বে থেকে রোগীদের লাইন পড়ে যায় টিকিট ক্রয়ের জন্য। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষার পড়ে কাঙ্খিত সোনার হারিণ নামক টিকিট সংগ্রহ করার পরে টিকিট কাউন্টার থেকে উল্লেখিত ডাক্তারের রুমের নাম্বার সংগ্রহ করে নির্দিষ্ট রুমে যাওয়ার পর সেখানে থাকা ডাক্তারদের ব্যবহারে মনে কষ্ট নিয়ে ঘরে ফিরতে দেখা যায় অনেক রোগীদের। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তারদের কর্কশ ব্যবহারের শীর্ষে রয়েছে ০৯ নং ও ৫৩নং রুম। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ০৯নং রুমে বসেন জুনিয়ার কনসালট্যান্ট (অর্থোঃ), অর্থোপেডিক বিশেষজ্ঞ, স্পাইন এবয় ট্রমা সার্জন কনসালট্যান্ট (অর্থোঃ সার্জারী) ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান খাঁন ও ৫৩নং রুমে বসেন জুনিয়ার কনসালট্যান্ট (মেডিসিন) ডাঃ মোঃ রফিকুজ্জামান রিন্টু। মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১১টার সময় সরজমিনে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে ০৯নং রুমে বসেন জুনিয়ার কনসালট্যান্ট (অর্থোঃ) ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান খাঁন এর নিকটে উপজেলার পানিসারা গ্রামের রাজাপুর গ্রামের বয়স্ক এক মহিলা রোগী তার মাজার ব্যাথার জন্য চিকিৎসা নিতে এসে বসে আছে। তার নিকট বসে থাকার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, বাবা আমার মাজার ব্যাথার জন্য সকাল থেকে বসে আছি এখনো পর্যন্ত ডাক্তারের রুমের দরজা খুলছে না। একথা শুনে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রধান উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারকে অবগত করতে যাওয়ার পর দেখা যায় তিনি অফিসে উপস্থিত নাই। মোবাইলে তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সিএস অফিসের মিটিংয়ে আছেন বলে জানান। এরপর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বড় বাবু শওকত আলীর সাথে তার অফিসে যোগাযোগ করে ০৯নং রুমে বসেন জুনিয়ার কনসালট্যান্ট (অর্থোঃ) ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান খাঁন এর বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন তিনি আজ আসেননি। ছুটিতে আছেন। তথন তার ছুটির বিষয়ে আবেদন নেওয়া আছে কিনা এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন আমার নিকট ছুটির আবেদন নেই। তাহলে ডাক্তার সাহেব কি করে ছুটিতে আছেন এটা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন সেটা আমাদের বড় স্যার (উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার) বলতে পারবেন।
জুনিয়ার কনসালট্যান্ট (অর্থোঃ) ডাঃ মোঃ কামরুজ্জামান খাঁনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ছুটিতে আছি। ছুটির জন্য আবেদন করেছেন কিনা জানতে চাওয়া হলে তিনি বলে আমি মৌখিক ছুটিতে আছি। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডাঃ রশিদুল আলম বলেন, তিনি ছুটিতে আছেন। আজ সকালে আমাকে মোবাইলে বলে ছিল তিনি ২দিন থাকবেন না। ছুটির আবেদন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তার যে মুহুর্তে লাগবে তিনি সেই মুহুর্তে আমাকে বলেছে কিন্তু ছুটির আবেদন পড়ে দিয়ে দিবে। যশোরের সিভিল সার্জন ডাঃ মাহমুদুল হাসান বলেন, ছুটির আবেদন করতে হবে। তবে ইমারজেন্সি ছুটি লাগলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসারের নিকট থেকে নিতে পারে।