ঢাকা, রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৯শে পৌষ ১৪৩১

নৌকা পেলে মুরাদ ঠেকানোর মুরদ নেই কারোর

কামরুল হাসান, জামালপুর : | প্রকাশের সময় : সোমবার ১৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৩:৫৫:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

রাজনীতির পাগলা হাওয়া ........

বহু নয়- অভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হোক সরিষাবাড়ীর আওয়ামী রাজনীতি

 তৃণমূলের ওপেন চ্যালেঞ্জ .......

নৌকা পেলে মুরাদ ঠেকানোর মুরদ নেই কারোর

 

রাজনীতিতে পালাবদল আছে, থাকবেও। এ পালাবদলের ধারাবাহিকতায়ই উত্থান-পতন ঘটে থাকে। সব মিলিয়ে রাজনৈতিক পালাবদল, উত্থান-পতন ও সমসাময়িক পরিস্থিতিসহ নেতৃত্বের গুণাবলিই নির্ধারণ করে কে টিকে থাকবে আর কে টিকে থাকবে না। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক গুরু, নীতি-নির্ধারক ও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের দিক নির্দেশনা অনেকটা টনিকের মতো কাজ করে বৈ কি। সর্বোপরি তো দলের প্রধান রয়েছেনই। এর আগে অবশ্যই সকল নেতাকেই রাজনৈতিক পরীক্ষায় তৃণমূল নেতা-কর্মী, ভোটার ও সাধারণ জনগণের ভোটে বা রায়ে বা সমর্থনে পাশ করে আসতে হয়। অর্থাৎ তাদের মণি কোঠায় স্থান দখল করে নিতে হয়। সেই সাথে তাদের শেষ ভরসার নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিতও হতে হয়। তা না হলে-সবই শেষ। তবে বাংলা প্রাবাদে আছে- ‘যার কাজ তার সাজে।’ এ কথাটি চালু থাকলেও রাজনীতির সকল ক্ষেত্র ও সকল পরিস্থিতিতে সকল ব্যক্তি বা সকল নেতার ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নাও হতে পারে। হাল ফ্যাশনের যুগে তৃণমূল নেতা-কর্মী, ভোটার ও সাধারণ জনগণের কাছে নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে পুরাতন বা নতুন তা ফ্যাক্টর নয়। তারা চায় সময়োপযোগী নেতা। যার দ্বারা দেশ ও জাতির কল্যাণ হবে। সুতরাং- দেখাও যাচ্ছে তাই। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায়, যে কোন গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রীয় সরকারের মান দন্ডই হলো- ডেমোক্রেটিক গভার্ণমেন্ট ইজ দ্যা পিপল, বাই দ্যা পিপল, অব দ্যা পিপল, ফর দ্যা পিপল অর্থাৎ ‘গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সরকার জনগণ, জনগণের দ্বারা, জনগণের ও জনগণের জন্য’ এই নীতির উপর নির্ভরশীল। নেতা ও নেতৃত্বের ক্ষেত্রে অবশ্যই এ নীতি মেনে চলতে হয়। এর অন্যথা হলেই গনতান্ত্রিক মনোভাবের হ্রাস পায়। আর তখনই ঘটে যত বিপত্তি। ফলে রাজনৈতিক মহলে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। এক সময় এ সমালোচনাই কাল হয়ে দাড়ায়। শেষ পর্যন্ত এর প্রভাব গিয়ে পড়ে- ব্যক্তি (নেতা) থেকে দলে। আর এ দল থেকে দেশ তথা জাতীয় পর্যায়ে।

জাতীয় সংসদ-১৪১, জামালপুর-৪ (সরিষাবাড়ী) এ আসনটি  আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে কেউ ছাড় দিতে রাজি নয়। তাই এটি একটি রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ আসন। একদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক সহচর, জামালপুর আওয়ামীলীগের দুর্দিনের কান্ডারী, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ও জামালপুর জেলা আওয়ামীলীগের দীর্ঘ দিনের সফল সভাপতি মরহুম বীর মুক্তিযোদ্ধা এডভোকেট মতিয়র রহমান তালুকদারের সুযোগ্য সন্তান দুই দুই বারের এমপি এবং সাবেক স্বাস্থ্য ও তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডা. মুরাদ হাসান। তিনি নিজের জীবন দিয়ে হলেও বিএনপি বা বিরোধী দলের সকল ষড়যন্ত্র শক্ত হাতে মোকবিলা করতে প্রস্তুত। তিনি উল্লেখ করেন- সরিষাবাড়ীতে বিএনপি-জামায়াত দমন করার মত অন্য কারও হিম্মত নেই। তিনি প্রায় দেড় যুগ ধরে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের দমিয়ে সরিষাবাড়ীতে স্ব-মহিমায় কর্তৃত্ব করে আসছেন। অপরদিকে বিএনপির সাবেক মহাসচিব, স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রী মরহুম ব্যারিস্টার আব্দুস সালাম তালুকদারের সুযোগ্য উত্তরসূরী জেলা বিএনপির সভাপতি ফরিদুল কবীর তালুকদার (শামীম)। তিনিও চান- সুকৌশলে এ আসনটি কব্জা করে নিতে। বর্তমানে এ দুই নেতা একে অপরের রাজনৈতিক শত্রু। রাজনৈতিক মহলসহ সর্ব মহলই এটা ভালো করেই জানে যে, সরিষাবাড়ীতে বিএনপি-জামায়াত ও তাদের দোসর রাজাকার-আলবদরদের দমিয়ে রাখার জন্য ডা. মুরাদ হাসানই উত্তম ব্যক্তি। আর তারাও ডা. মুরাদ হাসানকে যমের মত ভয় পায়।

সচেতন মহলের মন্তব্য- সরিষাবাড়ীর আওয়ামী রাজনীতি বহু নয়, অভিন্ন ধারায় প্রবাহিত হোক । তা না হলে নৌকার এ আসনটি হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দেয়ার জো নেই। এলাকার প্রবীণ রাজনৈতিকদের অভিমত- আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নিলে নৌকার প্রার্থীর ক্ষেত্রে বিজয়ী হওয়া অনেকটাই কঠিন হবে। তাই এ আসনের জন্য পরীক্ষিত প্রার্থী মনোনীত করা দরকার। আবার আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের ওপেন চ্যালেঞ্জ- ডা. মুরাদ হাসানকে নৌকার মনোনয়ন দিলে তা ঠেকানো অন্য কারোর মুরদ হবে না।