ঢাকা, শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৭ই মাঘ ১৪৩১

প্রধান উপদেষ্টার দাভোস সফর: বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশ

সালেহ্ বিপ্লব | প্রকাশের সময় : শনিবার ২৫ জানুয়ারী ২০২৫ ১০:২৮:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার চার দিনের ব্যস্ত দাভোস সফর সম্পন্ন করেছেন। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের (WEF) বার্ষিক সভা এবং উচ্চ পর্যায়ের বিভিন্ন পার্শ্ব ইভেন্টে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তিনি প্রায় ৫০টি বৈঠক ও অনুষ্ঠানে যোগ দেন।

প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ জানিয়েছেন, “ডব্লিউইএফ চলাকালীন অধ্যাপক ইউনূস অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন এবং তিনি বিশ্বের বহু গুরুত্বপূর্ণ নেতা ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে বৈঠক করেছেন।”

সফরের সময় অধ্যাপক ইউনূস চারজন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধান, চারজন মন্ত্রী, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক সংস্থার ১০ জন শীর্ষ কর্মকর্তা, ১০ জন সিইও এবং ব্যবসায়িক নেতার সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এছাড়া, তিনি ৯টি আনুষ্ঠানিক নৈশভোজ এবং মধ্যাহ্নভোজ, ৮টি মিডিয়া ইভেন্ট এবং আরও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।

২১ জানুয়ারি দাভোসে পৌঁছে অধ্যাপক ইউনূস তার ব্যস্ত কর্মসূচি শুরু করেন। সফরের প্রথম দিনেই তিনি সাতটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। এই দিন জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শোলজের সঙ্গে তার একান্ত বৈঠক হয়।

তিনি একই দিনে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস-হোর্তা, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পায়োংটার্ন সিনাওয়াত্রা, মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার ইব্রাহিম এবং ফিনল্যান্ডের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার স্টাবের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন।

২২ জানুয়ারি, দ্বিতীয় দিনে, অধ্যাপক ইউনূস প্রায় ১৪টি বৈঠক ও ইভেন্টে যোগ দেন। তার দিনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে ছিল জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস, জার্মানির বিশেষ কার্যনির্বাহী মন্ত্রী উলফগ্যাং শ্মিট এবং বেলজিয়ামের রাজা ফিলিপের সঙ্গে সাক্ষাৎ।

এছাড়াও, তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিশেষ দূত জন কেরি এবং প্রাক্তন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের সঙ্গে আলাপ করেন। এই দিন তিনি “জলবায়ু ও প্রকৃতির অবস্থা” শীর্ষক একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তব্য দেন এবং সামাজিক উদ্যোক্তাদের জন্য শোয়াব ফাউন্ডেশনের একটি ইভেন্টে অংশ নেন।

২৩ জানুয়ারি, সফরের তৃতীয় দিনে, অধ্যাপক ইউনূস আরও ১৪টি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। তিনি মেটার প্রেসিডেন্ট স্যার নিক ক্লেগ, ডিপি ওয়ার্ল্ডের সিইও সুলতান আহমেদ বিন সুলাইম এবং অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মহাসচিব অ্যাগনেস ক্যালামার্ডের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন।

এই দিন তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ক্লাউস শোয়াবের আয়োজিত একান্ত বৈঠকে যোগ দেন এবং ক্লাইমেট হাবে এক বক্তব্য রাখেন।

সুইজারল্যান্ডে তার শেষ দিনেও অধ্যাপক ইউনূস বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নেন। আমেরিকান বিনিয়োগকারী রে ডালিও এবং জেনেল গ্রুপের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান আমের আলীরেজার সঙ্গে বৈঠক তার দিনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল।

২১ জানুয়ারি শুরু হওয়া এই সফর ২৪ জানুয়ারি রাতে শেষ করে অধ্যাপক ইউনূস জুরিখ থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। আশা করা হচ্ছে, তিনি ২৫ জানুয়ারি দেশে ফিরবেন।

এই সফরের মাধ্যমে অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশকে বিশ্ব অর্থনৈতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণভাবে উপস্থাপন করেছেন। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অবস্থান, বৈশ্বিক নীতি নির্ধারণ ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে আরও শক্তিশালী হয়েছে।

বায়ান্ন/এসএ/এসবি/পিএইচ