সিলেটের বিয়ানীবাজারে উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। উপজেলার সবকটি ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। বুধবার সুরমা-কুশিয়ারা এ দুই নদীতে পানি বেড়েছে। পানি বাড়তে থাকায় বন্যা পরিস্থিতিরও অবনতি হচ্ছে। ইতোমধ্যে উপজেলার বেশ কয়েকটি নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। প্রায় ১৫০ হেক্টর জমির ধান পানির নীচে তলিয়ে গেছে।
এছাড়াও বিয়ানীবাজার-সিলেট আঞ্চলিক মহা সড়কের উপরে দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হওয়ার কারণে বুধবার সকাল থেকে যান চলাচলে বিগ্ন ঘটছে। ফলে সড়কে যানযট দেখা দিয়েছে।
পাউবো সিলেটের সূত্রে জানা যায়, বুধবার সুরমার পানি সিলেট পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। এ পয়েন্টে পানি গতকালের চেয়ে আজ বেড়েছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সুরমা নদীর সিলেট পয়েন্টে পানি ছিল ১০.৯০ মিটার। কুশিয়ারা নদীর পানি শেওলা পয়েন্টে বিপৎসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকাল সন্ধ্যায় পানিসীমা ছিল ১৩.৪০ মিটার; আজ সকালে হয় ১৩.৫০ মিটার।
বিয়ানীবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহমেদ রাশেদুন নবী জানান, বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় এখানকার প্রায় ১৫০ হেক্টর ধান পানির নীচে তলিয়ে আছে। সুরমা ও কুশিয়ারার একাধিক পয়েন্টে ডাইক ভেঙ্গে হু-হু করে পানি ঢুকছে। ফলে নিম্নাঞ্চলের বহু বাড়ি ও এলাকা পানিতে নিমজ্জিত হয়ে গেছে।
এদিকে বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতির আশঙ্কায় উপজেলায় ২৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিক নূর স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে আপাতত: দূর্গত লোকজন আশ্রয় নেয়ার সুযোগ পাবে। এখানকার পৌর এলাকার নয়াগ্রাম-২ ও শ্রীধরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, আলীনগরের উত্তরভাগ, সুরমা ও রামধা, চারখাইয়ের প্ইলগ্রাম, পাতন-১, হাজী ওয়াজিদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দুবাগের সিলেটিপাড়া-২ ও খাড়াভরা, শেওলার দিঘলবাক ও কোনা শালেস্বর, কুড়ারবাজারের খশির ও গড়রবন্দ, মাথিউরার দুধবকসি ও পশ্চিম মাথিউরা, তিলপাড়ার তিলপাড়া ও দাসউরা, মোল্লাপুরের মাটিকাটা ও মোল্লাপুর, মুড়িয়ার ঘুঙ্গাদিয়া ও বড়উধা, লাউতার কালাইউরা ও টিকরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশিক নূর জানান, সুরমা-কুশিয়ার নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিয়ানীবাজারে ২৪ টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে কোন দূর্গত লোকজন ওঠার খবর পাইনি। তবে যারা আশ্রয় নেবে তাদের জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হবে।