সব অংশীজনের দায়বদ্ধতা, সব দলের অংশ গ্রহণ, ভোটারের ভোট দেওয়ার অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষে ১৫০টির মতো ছোট-বড় সুপারিশ করে প্রধান উপদেষ্টার কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন।
বুধবার (১৫ জানুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে কমিশন তাদের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদারের নেতৃত্বে কমিশনের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রামের থেকে অনেক মানুষ এসেছে কথা বলতে উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, দুয়েকজন বলে গিয়েছে- সংসদ ভবনের এ ইমারতে যেন কুৎসিত লোক আসতে না পারে। আমরা মনে করি- এটা ছিল আমাদের প্রতি ম্যান্ডেট। ১৮টি উল্লেখযোগ্য জায়গায় ১৫০টির মতো সুপারিশ করেছি। এ সুপারিশের অন্যতম লক্ষ্য- নির্বাচন কমিশনের (ইসি) স্বাধীনতা নিশ্চিত করা। তাদের ক্ষমতায়িত করা। একই সাথে তাদের দায়বদ্ধ করা।
দলগুলোর মধ্যে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হলে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা যাবে, সে আশা করাও দুরাশা বলে মন্তব্য করেন কমিশন প্রধান।
রাজনৈতিক দলগুলোকে গণতান্ত্রিক চর্চা ও জবাবদিহিতার আওতায় আনার বিষয়ে তিনি বলেন,দায়বদ্ধতার বিধান অন্তর্ভুক্ত করেছি। এটা চারটিখানি কথা নয়। এটা বলা সহজ; কিন্তু এটা আমাদের করতে হবে।
বহু বছর ধরে প্রবাসীরা ভোটাধিকার বঞ্চিত তুলে ধরে বদিউল আলম বলেন, তাদের যাতে ভোটাধিকার দেওয়া যায়, তাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে সুপারিশে। প্রার্থীদের যোগ্যতা-অযোগ্যতার বিষয়ে কিছু ‘অভিনব’ প্রস্তাবও করা হয়েছে।
নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন বিষয়ে তিনি বলেন, এখন যে ব্যবস্থা রয়েছে তা আলঙ্কারিক। তা অসম্মানিত করে। আমরা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার প্রস্তাব করেছি। নির্বাচনী অপরাধের বিচার সুসংহত করে তাদের যেন দায়বদ্ধ করা যায় সে বিষয়ে সুপারিশ করেছি।”
২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালের ভোটের কথা উল্লেখ করে বদিউল আলম মজুমদার বলেন, বিশেষত গত তিনটি নির্বাচনে যারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে নির্বাসনে ফেলে দিয়েছে। কর্মকর্তা শুধু নয়, আমাদের কমিশন সদস্যরা, তাদের ব্যাপারে তদন্ত করার, বিশেষত ২০১৮ সালের মধ্যরাতে অভূতপূর্ব কাণ্ড ঘটেছে সে ব্যাপারে তদন্ত করে তাদের বিচারের আওতায়, দায়বদ্ধতার আওতায় আনা বলে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি।
সংস্কার কাজকে এগিয়ে নিতে আরও কিছু আইনের খসড়া নিয়ে কাজ চলছে বলে উল্লেখ করেছেন এই সংস্কার কমিশন প্রধান।
তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী ও কার্যকর করার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে আইনের খসড়া তৈরি করা হয়েছে। আরও দুই-একটা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কিছু আইন রয়েছে সংস্কার করা দরকার। ইতোমধ্যে কিছু গুছিয়ে আনা হয়েছে। এজন্য সময় দিতে হবে।
এটা আমার জীবনে গুরুত্বপূর্ণ এসাইনমেন্ট ছিল বলে জানিয়েছেন বদিউল আলম মজুমদার।