বিদ্যুৎ বিল প্রায় ৭ কোটি টাকা বকেয়া থাকায় ভোলায় সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে ওজোপাডিকো। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে রোববার রাত থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ৩ রাত ভোলা পৌরসভা এলাকা ভুতুড়ে শহরে পরিনত হয়েছে। বিভিন্ন আতংকে রাত যাপন করছেন ব্যবসায়ীরাসহ পৌরবাসি।
ভোলা পৌরসভার বাসিন্দা বিপ্লব, শফিক, কালাম, এডভোকেট নজরুল হক অনু বলেন, এক দিনে নয়, গত প্রায় ৯ বছরে বিদ্যুতের বকেয়া বিল প্রায় ৭ কোটিতে গিয়ে পৌঁছেছে, তার সাথে আছে সুদ। তারা বলেন, প্রতি বছর অল্প পরিমানেও যদি পৌর কর্তৃপক্ষ বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করতো তাহলে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হতো না। এ কয় বছর ভোলা পৌরসভা জিয়া মার্কেটের দোকান বরাদ্দ, হোল্ডিং ট্যাক্স, ট্রেড লাইসেন্স, বাড়ির প্লান অনুমোদন, গ্যাসের সংযোগ নেয়ার জন্য রাস্তা কর্তনের ক্ষতিপূরনের,বিজ্ঞাপনকর ও পৌর মার্কেটগুলোর ভাড়া এবং হাটবাজার ইজারাসহ বিভিন্ন খাত থেকে প্রায় কোটি কোটি টাকা আয় করেছে। বিভিন্ন প্রজেক্ট পৌরসভার উন্নয়নের জন্য যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সেসব টাকা কোন খাতে কত ব্যয় করেছে, কেন বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করা সম্ভব হলোনা সেটা পৌরবাসি জানতে চায়। পৌরবাসির অভিযোগ, পৌরসভার দুরবস্থা কেন, টাকাগুলি গেল কোথায় ? এখন জনস্বার্থেই পৌরকর্তৃপক্ষের উচিত বিদ্যুৎ বিভাগের বিল পরিশোধ করে দ্রুত বিদ্যুত সংযোগের ব্যবস্থা এবং ভোলা-১ আসনের এমপি, সাবেক শিল্প ও বানিজ্য মন্ত্রী আলহাজ্ব তোফায়েল আহমেদ,স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়, র্দূনীতি দমন কমিশন বিষয় গুলো তদন্ত করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহন করা।
মঙ্গলবার রাতে ভোলা পৌর শহরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সদর রোড, খালপাড়, মহাজন পট্টি, নতুন বাজার, ইলিশা সড়ক, কালিবাড়ি রোড, হাসপাতাল রোর্ড, ওয়েষ্টার্ণ পাড়া, উকিল পাড়া, যুগিরঘোল, পিটিআই সড়ক, আদর্শ পাড়া, পুরাতন যুগীরঘোলসহ পৌর এলাকার বিভিন্ন সড়ক অন্ধকারে রয়েছে।
এলাকাবাসি জানান, বিদ্যুত বিভাগের কর্মকর্তারা সড়ক বাতির বিদ্যুত সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছে।
ভোলা বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগের (ওজোপাডিকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃখালিদুল ইসলাম জানান, ভোলা পৌরসভার কাছে প্রায় ৭ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে। বারবার বকেয়া পরিশোধের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিলেও কোনো ফল হয়নি। এমনকি জেলা প্রশাসকের উপস্থিতিতে জেলার মাসিক উন্নয়ন সভায় তাদেরকে বকেয়া পরিশোধের জন্য বলা হলেও তারা কর্ণপাত করেননি। তাই বিদ্যুৎ বিভাগের আওতায় পৌরসভার মধ্যে যে কয়টি সড়ক রয়েছে সে সব সড়ক বাতির বিদ্যুৎ সংযোগ রোববার বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ভোলা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পৌরসভার প্রধান নির্বাহী মোস্তাফিজুর রহমানকেও একাধিকবার ফোন দিলে তিনিও তার ফোন রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি ভোলা পৌরসভার ১ নং প্যানেল মেয়র সালাউদ্দিন লিঙ্কন। তিনি বলেন, মেয়রের অনুপস্থিতিতে আমি শুধু মানুষের নাগরিকত্ব, ট্রেড লাইসেন্স, সার্টিফিকেট, প্রত্যয়নপত্রসহ দাপ্তরিক কাগজে স্বাক্ষর করি। এ ছাড়া অফিসিয়াল কোন বক্তব্য দিতে পারিনা।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুস সাত্তার বলেন, পিডিপির কাছে ভোলা পৌরসভার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া পড়েছে এটা সত্য, কিন্তু আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া অফিসিয়াল বক্তব্য দেওয়ার ক্ষমতা রাখিনা।
