রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) প্রথম বর্ষে ভর্তি প্রক্রিয়ায় বহাল রাখা পৌষ্যকোটার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় দিনের মত আমরণ অনশনে রয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক জোহা চত্বরে গতকাল সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া এই অনশন অব্যাহত রয়েছে। শিক্ষার্থীরা দাবি করেছেন, এই বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি বাতিল না করা পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, পৌষ্যকোটা মেধাবী শিক্ষার্থীদের অধিকার ক্ষুণ্ণ করছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়কে "পারিবারিক প্রতিষ্ঠান" রূপে গড়ে তোলার পাঁয়তারা চলছে। এই কোটার ফলে কিছু সুবিধাপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছেন, যা মেধাভিত্তিক একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য ক্ষতিকর বলে শিক্ষার্থীরা মনে করেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে আল শাহরিয়া শুভ নামে ফোকলোর বিভাগের এক শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করা হয়।
শিক্ষার্থীদের একাংশ জানান, “বৈষম্যমূলক এই কোটার জন্য সরকারকে পূর্বেও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখোমুখি হতে হয়েছে এবং এই আন্দোলনের কারণেই সরকারের পতন পর্যন্ত হয়েছে। অথচ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এখনো এই বৈষম্যমূলক কোটাকে বজায় রাখার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।”
অন্যদিকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মাহবুবর রহমান বলেন, "শিক্ষার্থীদের সাথে আমাদের কথা হয়েছে। তারা উপাচার্য মহোদয়কে আন্দোলনস্থলে এসে শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি কথা বলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন। বিষয়টি উপাচার্যকে জানানো হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এ বিষয়ে কোনো সমাধানে পৌঁছানো যাবে।”
এছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরাও এই আন্দোলনের প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেছেন এবং কোটা পদ্ধতির বিরুদ্ধে নিজেদের অসন্তোষের কথা জানিয়েছেন। তাদের মতে, এই ধরনের কোটা পদ্ধতি শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মানকে নষ্ট করছে না, বরং সামাজিক বৈষম্যও সৃষ্টি করছে।
আন্দোলনস্থলে থাকা শিক্ষার্থীরা জোহা চত্বরে বিভিন্ন স্লোগানে মুখরিত করে তুলেছেন। ‘মেধার মূল্যায়ন চাই’, ‘পৌষ্যকোটা বাতিল চাই’ সহ বিভিন্ন স্লোগানে তারা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি নিজেদের দাবি তুলে ধরছেন। শিক্ষার্থীরা জানান, "আমাদের দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত আমরা এখান থেকে সরবো না।"
অনশনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা এ সময় প্রশাসনের কাছে তাদের দাবি আদায়ে অনড় অবস্থানে থাকার ঘোষণা দেন।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে