লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যার ঘটনায় শেখ হাসিনা, সাবেক সামরিক উপদেষ্টা তারিক আহমেদ সিদ্দিকসহ ৪১ জনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে (১৬ জানুয়ারি) ডা. ফয়েজ আহমেদের ছেলে ডা. হাসানুল বান্না চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এ অভিযোগ দাখিল করেন। এতে আসামিদের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
জানানো হয়েছে, ২০১৩ সালের ২৩ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. ফয়েজ আহমদকে নিজ বাসায় গুলি করে হত্যা করে র্যাব। হত্যার পর তাকে বাসার ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়া হয়। গভীর রাতে শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
এছাড়াও এই হত্যাকাণ্ডের মূল নায়ক নারায়ণগঞ্জের সাত খুনের মূল পরিকল্পনাকারী র্যাব কর্মকর্তা তারেক সাঈদ বলে অভিযোগ করা হয়। তাকেও আসামি করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে এই ঘটনাটির সুষ্ঠ বিচারের প্রত্যাশা ভুক্তভোগীর পরিবারের।
ডা. হাসানুল বান্না বলেন, ২০১৩ সালের ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে ডা. ফয়েজ আহমেদ এর নিজ বাসার ছাদে নিয়ে পিটিয়ে, গুলি করে ছাদ থেকে ফেলে হত্যা করা হয়। ডা. ফয়েজ আহমেদ অত্যন্ত মানবিক ডাক্তার হিসেবে পরিচিত এবং লক্ষ্মীপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ছিলেন। হত্যার ঘটনায় সাবেক অবৈধ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহি উদ্দিন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সামরিক উপদেষ্টা তারেক আহাম্মদ ছিদ্দিকী, সাবেক এ.ডি.জি র্যাব মেঃ জেঃ জিয়াউল আহসান, র্যাব-১১ এর সাবেক সি.ই.ও তারেক সাইদ মোহাম্মদসহ ৪১ জনকে আসামী করা হয়েছে। ঐদিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী সরকারি বিভিন্ন প্রকার আগ্নেয়াস্ত্রে সজ্জিত হয়ে র্যাব এর স্টিকার যুক্ত একটি গাড়িতে করে ঘটনাস্থলের আমাদের বাসায় এসে লোহার গেট ভেঙে ফেলে এবং ডা. ফয়েজ আহমেদকে নিজের বাসার দ্বিতীয় তলার কক্ষ থেকে ধরে নিয়ে ধাক্কাতে ধাক্কাতে বিল্ডিংয়ের ছাদে নিয়া যায়। এই সময় আইন-শৃংখলা বাহিনীর অন্যান্য সদস্যরা (আসামীগন) বিল্ডিংয়ে ঢোকে সকল কক্ষের দরজার তালা ভেঙে তল্লাশী ও ভাঙচুর চালায়।
আসামীগণ ডা. ফয়েজ আহমেদকে ছাদে নিয়ে তাদের হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রের বাঁট দিয়া হত্যার উদ্দেশ্যে ডা. ফয়েজ আহমেদ এর মাথার ও নাকে-মুখেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। ঊর্ধ্বতন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্দেশে আসামী তারেক সাইদ মোহাম্মদ তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ডা. ফয়েজ আহমেদকে গুলি করে এবং এ সময় আসামীগণ গুরুতর আহত অবস্থায় মৃত্যু নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ডা. ফয়েজ আহমেদকে তৃতীয় তলার ছাদের ওপর থেকে ফেলে দেয়। এ সময় ডা. ফয়েজ আহমেদ এর ছোট ছেলে আমার ভাই বেলাল আহমেদ বাসার ছাদের কার্নিশে লুকানো অবস্থায় এসব ঘটনা দেখেন।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/পিএইচ