ঢাকা, সোমবার ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ই পৌষ ১৪৩১

শাবি শিক্ষকদের আবার ফিরিয়ে দিলেন অনশনরত শিক্ষার্থীরা

শাবি প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : বৃহস্পতিবার ২০ জানুয়ারী ২০২২ ০৫:৫৪:০০ অপরাহ্ন | সিলেট প্রতিদিন

শিক্ষকদের আলোচনার প্রস্তাব আবারও ফিরিয়ে দিয়েছেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে বৃহস্পতিবার দুপুরে অর্ধশতাধিক শিক্ষক উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে যান।

এ সময় শিক্ষার্থীরা জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে তাদের আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি না জানালে শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করবেন না।

শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে বলেন, ‘প্রয়োজনে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে এ ঘটনার জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করা হবে। যার দোষ পাওয়া যাবে তার বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আন্দোলনে তারাও শরিক হবেন।’

শিক্ষকদের এমন কথায় আশ্বস্ত না হয়ে আলোচনার প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা। পরে সমঝোতায় ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান শিক্ষকরা। তবে যাওয়ার আগে জানিয়ে যান, আলোচনার জন্য আবারও আসবেন।

উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের পদত্যাগ দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অনশন করে যাচ্ছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী। বৃহস্পতিবার দুপুরে অনশনকারীদের একজন অসুস্থ হয়ে পড়েন। কাজল দাস নামের ওই শিক্ষার্থীকে নগরের রাগিব রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদমাধ্যমে কথা বলেন শিক্ষার্থী নাফিজা আনজুম। তিনি বলেন, ‘যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও গুলির নির্দেশ দেন। তার কাছে আমরা শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই নিরাপদ অনুভব করছি না। তার অধীনে আমরা কিছুতেই ক্লাসে ফিরে যাব না। তাকে পদত্যাগ করতেই হবে।’

শিক্ষকদের আলোচনার প্রস্তাব প্রসঙ্গে আন্দোলকারী মোহাইমিনুল বাশার বলেন, ‘আমরা নায্য দাবিতে আন্দোলন করছি। উপাচার্য আমাদের ওপর গুলি চালিয়েছেন। আমরা তার পদত্যাগ চাই। এখন আর আলোচনার সুযোগ নেই। আমরা চাই আমাদের শিক্ষকরাও এই দাবির সঙ্গে একাত্ম হয়ে আমাদের আন্দোলনে শরিক হবেন। এই স্বৈরাচারী উপাচার্যকে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করবেন।’

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় ব্যর্থ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম বেলন, ‘আমরা তাদের বলেছি, এ ঘটনায় যারাই দায়ী তাদের তদন্ত করে খুঁজে বের করা হবে। যদি উপাচার্যেরও দোষ পাওয়া যায়, তাহলে আমরাও তার পদত্যাগের দাবিতে সোচ্চার হব। তবে তদন্তের সময় দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা রাগ করেছে। তবে আমাদের রাগ করলে চলবে না। আমরা তাদের কাছে আবারও আলোচনার জন্য আসব। বারবার আসব।  বুধবার রাতে শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙাতে ও আলোচনার প্রস্তাব নিয়ে এসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শতাধিক শিক্ষক।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের নেতৃত্বে শিক্ষকরা উপাচার্য ভবনের সামনে এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে চান। তবে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ না করলে শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। প্রায় ২ ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান শিক্ষকরা।

বুধবার রাতে আন্দোলন চলাকালে অসুস্থ হয়ে পড়েন দুই শিক্ষার্থী। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।