সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি মো. ফরহাদ হোসেন (৩২) দলীয় সাইনবোর্ড ব্যবহারকারি কতিপয় সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হয়েছে। বৃহষ্পতিবার রাতে একটি প্রস্তুতি সভা শেষে জেলা শহর সাতক্ষীরা থেকে বাড়ি ফেরার পথে দেবহাটা উপজেলার পুষ্পকাটি ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় সশস্ত্র হামলার শিকার হন তিনি। এসময় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা পিটিয়ে ছাত্রদল সভাপতি ফরহাদ হোসেনকে বেধড়ক মারপিটসহ তার মাথায় কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। বর্তমানে তিনি দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আহত ফরহাদ হোসেন উপজেলার উত্তর সখিপুরের নূর ইসলাম গাজীর ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ফরহাদ হোসেন জানান, খুলনায় বিএনপি’র আসন্ন প্রোগ্রামকে ঘিরে বৃহষ্পতিবার বিকেলে সাতক্ষীরা শহরের নিরিবিলি কমিউনিটি সেন্টারে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করে জেলা ছাত্রদল। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই সভায় অংশগ্রহণ করেন। সভায় বক্তৃতার জন্য জেলা ছাত্রদলের ৪১ নং সহ-সভাপতি দেবহাটা উপজেলার পুষ্পকাটি গ্রামের অহিদুজ্জামানের ছেলে আবির হোসেন লিয়নের নাম ঘোষনা হলে ক্ষুদ্ধ ত্যাগী নেতাকর্মীরা হইহুল্লোড় করেন ও প্রতিবাদ জানান। এনিয়ে দেবহাটা উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি ফরহাদ হোসেনসহ তার লোকজনের ওপর ক্ষিপ্ত হন জেলা ছাত্রদলের ওই সহ-সভাপতি আবির হোসেন লিয়নসহ তার অনুসারীরা। সভা শেষে জেলা শহরে প্রয়োজনীয় কাজ মিটিয়ে মোটরসাইকেল যোগে সাতক্ষীরা থেকে সখিপুরে বাড়িতে ফিরছিলেন ছাত্রদল সভাপতি ফরহাদ হোসেন।
তার আগেই এলাকায় ফিরে জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক সখিপুরের শফিকুল ইসলাম ওরফে কলা শফিকুলের ছেলে মুশফিক, পুষ্পকাটির অহিদুজ্জামানের ছেলে জেলা ছাত্রদলের সদস্য তাসকিন আহমেদ, বহেরা গ্রামের অহাব আলীর ছেলে জেলা ছাত্রদলের সদস্য রাফিজ হোসেন, বালিয়াডাঙ্গা গ্রামের লুৎফর মোল্যার ছেলে কুলিয়া ইউনিয়ন ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হোসেন আলী, একই গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে ছাত্রদল নেতা নীরব হোসেনসহ অস্ত্রেশস্ত্রে সজ্জিত ছাত্রদলের সাইনবোর্ড ব্যবহারকারী কতিপয় বখাটে সন্ত্রাসীদের নিয়ে ওৎ পেতে ছিলেন জেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি আবির হোসেন লিয়ন।
রাত সোয়া ৮টার দিকে উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি ফরহাদ হোসেন ও তার দুইজন অনুসারীকে বহনকারী মোটরসাইকেলটি পুষ্পকাটি ইটভাটা সংলগ্ন এলাকায় পৌঁছালে তাদের গতিরোধ করে আবির হোসেন লিয়নের নের্তৃত্বে ওৎ পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এসময় হামলাকারিরা উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি ফরহাদ হোসেনকে বেধড়ক পিটিয়ে ও তার মাথায় কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে।
পরে স্থানীয়রা মুমুর্ষ অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে দেবহাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তার মাথায় গভীর ক্ষতের কারণে আটটি সেলাই দেয়া হয়েছে এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে মারপিটের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানিয়েছেন। এঘটনায় ছাত্রদলের অভ্যন্তরে চাপা ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
এব্যাপারে উপজেলা জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি’র আহ্বায়ক শেখ সিরাজুল ইসলাম বলেন, দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্ত এধরনের হামলা ও মারপিটের ঘটনা রীতিমতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও অপ্রত্যাশিত। এতে নের্তৃত্বদানকারি ও জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
দেবহাটা থানার ওসি বাবুল আক্তার বলেন, হামলা ও মারপিটের বিষয়টি ইতোমধ্যেই পুলিশ অবগত হয়েছে। তবে এঘটনায় আহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনও কোন লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত পরবর্তী জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও আশ্বস্থ করেন তিনি।