সিলেটের বিভিন্ন উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। সীমান্তবর্তী কানাইঘাটে সুরমা নদীর পানি সামান্য হ্রাস পেলেও সিলেট পয়েন্টে বেড়েছে। এতে করে সিলেটের ছয় উপজেলাসহ নগরীর বেশির ভাগ মানুষ এখন পানিবন্দি। আকস্মিক এই বন্যায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
বুধবার জকিগঞ্জে নতুন করে কুশিয়ারা নদীর বড়চালিয়া, সুপ্রাকান্তি ও রারাই গ্রামে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। জেলার কানাইঘাট ও গোয়াইনঘাট থানা সদরসহ বিভিন্ন হাট বাজারে এখনও হাঁটু থেকে কোমর পানি বিরাজ করায় অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। বাড়িঘর, রাস্তঘাটও বন্যার পানিতে তলিয়ে আছে।
এদিকে সুরমা নদীর পানি সামান্য বাড়ায় সিলেট শহরের বন্যা পরিস্থিতিরও কিছুটা অবনতি ঘটেছে। যে সকল বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকেছে, রাস্তাঘাট তলিয়েছে কিংবা অফিস ও দোকানপাটে পানি ঢুকেছে সেগুলোর খুব একটা হেরফের ঘটেনি। ফলে এ সকল এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিন কাটছে।
এদিকে, সিলেটে বন্যা কবলিতদের জন্য ১৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এমন তথ্য জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. মুজিবর রহমান। এ সকল আশ্রয়কেন্দ্রে খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএনওদের সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখার নির্দেশনা দেওয়া আছে।
জেলা প্রশাসক জানান, বন্যা কবলিতদের জন্য আরেকদফায় ১০০ টন চাল ও ৩০০০ প্যাকেট শুকানো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এর আগে ১২৯ টন চাল ও ১০০০ শুকানো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল।
পানি উন্নয়ন বোর্ড বলছে, ২০০৪ সালের পর নদীর পানি কখনো এতোটা বাড়েনি। ১৮ বছরের মধ্যে এবারই সবচেয়ে বড় বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। আর আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন, ২৩ জুন পর্যন্ত সিলেটে বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে।
এদিকে সিলেট আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাইয়িদ চৌধুরী জানিয়েছেন, আগামী কয়েকদিন এই বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। তাছাড়াও ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বৃষ্টিও কমছে না। তাই পাহাড়ি ঢল নামছে এবং আমাদের দেশেও পানি বাড়ছে।