সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার বাহাড়া ইউনিয়ন পরিষদের নব নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুর উপর পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও আব্দুল কাইয়ূম মামলা করেছেন। বৃহস্পতিবার সন্ধার পরে উপজেলা পরিষদের সামনে পাউবোর কার্যালয়ে ঢুকে চেয়ারম্যান মদ্যপ অবস্থায় সঙ্গীয় আরো ২/৩ জন মিলে এসও আব্দুল কাইয়ূমকে শারীরিক ভাবে লাঞ্ছিত করে। এসময় অফিস কক্ষের চেয়ার টেবিল, আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ছিড়ে ফেলেন চেয়ারম্যান নান্টু । হামলায় আহত আব্দুল কাইয়ুম কে সঙ্গে সঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়েছে। পরে আহত পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূম বাদী হয়ে বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টু কে প্রধান আসামি করে শাল্লা থানায় মামলা দায়ের করেন। শাল্লা থানার মামলা নং ২।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি ৫ম ধাপে অনুষ্ঠিত ইউপি নির্বাচনে শাল্লা উপজেলার ৩নং বাহাড়া ইউনিয়নের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিশ্বজিৎ চৌধুরী নান্টু গতকাল বৃহস্পতিবার (২০জানুয়ারী) সন্ধ্যা ৬টায় শাল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের অফিসে এসও মোহাম্মদ আব্দুল কাইয়ূমের বিশ্রাম কক্ষে ঢুকে ফসল রক্ষা বাঁধের কাজের জন্য ২০টি পিআইসি দাবী করেন। এ সময় ঐ কর্মকর্তা এতগুলো পিআইসি একজনকে দেয়া আইন পরিপন্থি বলে জানালে চেয়ারম্যান তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে ও পরনের কাপড়-চোপড় টানা-হেছড়া করে তার উপর হামলা চালিয়ে তাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। এ সময় অফিস কক্ষের চেয়ার টেবিল আসবাবপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ভেঙ্গে ফেলে চেয়ারম্যান নান্টু। এর পর কক্ষ থেকে বের হয়ে উন্মাদের মতো আচরণ করে এবং পথচারীদেরকে মারপিট করেন তিনি।
অভিযোগসূত্রে আরো জানা যায়, চেয়ারম্যান বিশজিত চৌধুরী নান্টু হামলা করার সময় মাদ্যপ অবস্থায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার কক্ষে প্রবেশ করেন। এ সময় চেয়ারম্যান মাতাল ছিলেন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা।
হাওরের কৃষকদের একমাত্র বোরো ফসল রক্ষার জন্য সরকার চলিত বছর শাল্লা উপজেলায় মোট ১৩৬টি হাওররক্ষা বাঁধের কাজ বাস্তবায়নের জন্য পিআইসি গঠনের কাজ চলমান রয়েছে। এরমধ্যে থেকে চেয়ারম্যান বিশজিত চৌধুরী নান্টু ২০টি পিআইসির কাজ নিজের বলয়ে নিতে এসও আব্দুল কাইয়ূমকে দীর্ঘদিন থেকে চাপ সৃষ্টি করে আসছিলেন । সর্বশেষ কাজ না পাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যান সঙ্গে আরো ২/৩ জনকে নিয়ে ওই কর্মকর্তার অফিস কক্ষে ঢুকে তার উপর হামলা চালায়।
এ ব্যাপারে হামলায় গুরুতর আহত পানি উন্নয়ন বোর্ডের এসও আব্দুল কাইয়ুমের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে চেয়ারম্যান কর্তৃক তার উপর হামলা ও থানায় লিখিত অভিযোগ দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে চেয়ারম্যান নান্টু তাকে ২০টি পিআইসি দেয়ার জন্য নানানভাবে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। আমি নীতিমালা ভঙ্গ করে তো আর একজনকে এতগুলো পিআইসি দিতে পারি না। তার দাবি মিটাতে না পারায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার উপর হামলা চালিয়ে আমাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন।
এ ব্যাপারে হামলাকারী নব-নির্বাচিত ৩নং বাহারা ইউপি চেয়ারম্যান বিশ্বজিত চৌধুরী নান্টুর মোবাইল ফোনে বার বার চেষ্টা করেও কথা বালা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে শাল্লা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।