সুনামগঞ্জে ৬টি ধর্ষণ ও অপহরণের মামলায় ৪ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এসব মামলায় দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সুনামগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক (দায়রা জজ) মো. জাকির হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
জানা যায়, ভুক্তভোগী লাকী বেগমকে অপহরণ করে ঢাকায় নিয়ে যান আসামি হারুন মিয়া। সেখানে ৮-৯ দিন আটক রেখে ২০০৯ সালের ২০ এপ্রিল হারুন মিয়া ভুক্তভোগীকে সুনামগঞ্জে নিয়ে আসেন। তখন পুলিশ হারুনকে আটক করে এবং ভুক্তভোগীকে উদ্ধার করে। হারুন মিয়া (৪২) সদর উপজেলার মঈনপুর গ্রামের মৃত আব্দুল করিমের ছেলে। এ ঘটনায় আদালত আসামি হারুন মিয়াকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেন।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন পি.পি নান্টু রায় এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন আবুল বাশার।
এ দিকে ২০০৯ সালের ৫ আগস্ট ছাতক উপজেলার পাইগাঁও গ্রামের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী মক্তবে যাওয়ার জন্য বের হয়। তখন আসামি আক্তার হোসেন তাকে অপহরণ করে। পরে পুলিশের সহায়তায় ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। আসামি আক্তার হোসেন উপজেলার গড়গাঁও দড়ারপাড়া গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে। আদালত আসামি আক্তার হোসেনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও ৪ মাসের কারাদণ্ড দেন। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সফর আলী এবং মনোয়ার হোসেনকে খালাস দেন আদালত।
২০১৯ সালের ১৯ অক্টোবর ছাতক উপজেলার লায়েক মিয়ার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়। মামলায় আদালত আসামি লায়েক মিয়াকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। অনাদায়ে আরও ৩ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। লায়েক মিয়া উপজেলার বাউসা গ্রামের আবাব মিয়ার ছেলে।
এ দিকে ২০১৩ সালের ২০ জুলাই শামসুন নূর ওরফে শামসু মিয়ার (৫২) বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা হয়। অভিযোগের প্রমাণ না পাওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
২০১২ সালের ১০ আগস্ট সকালে যৌতুকের দাবিতে ভুক্তভোগী মোছা. সেলিনা বেগমকে মেরে গুরুতর জখমের অভিযোগ ওঠে মো. আমির উদ্দিনের (৩৫) বিরুদ্ধে। তিনি গ্রামের সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নৈনগাঁও গ্রামের মো. ছায়েদ আলী ছেলে। তবে আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেন।
অন্য দিকে মোছা. আছিয়া বেগমকে যৌতুকের দাবিতে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতেন মোক্তার হোসেন (২২)। তিনি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার হরিণাপাটি গ্রামের মো. আব্দুল হামিদের ছেলে।
হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে আদালতে মামলা করেন আছিয়া বেগম। এ ঘটনায় আদালত মোক্তার হোসেনকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।অনাদায়ে আরও ২ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায় ঘোষণার সময় আসামি পলাতক ছিলেন।