ঢাকা, রবিবার ১২ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮শে পৌষ ১৪৩১

হরতাল অবরোধ রাজনৈতিক অস্থিরতায় সংকটে পর্যটন নগরী কুয়াকাটা

বরিশাল ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৬:০১:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর

চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় আগামী রবি ও সোমবার আরও দুইদিন অবরোধের ডাক দেওয়ায় সংকটের মুখে পর্যটন নগরী কুয়াকাটার ব্যবসায়ীরা। স্থবির হয়ে পড়েছে সকল কর্মকাণ্ড। অলস সময় পার করছেন পর্যটনশিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। করোনার ধাক্কা কেটে যাওয়ার পর কুয়াকাটায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরতে শুরু করে। পদ্মা সেতুকে আশীর্বাদ মনে করছিলেন ব্যবসায়ীরা। এখন তা‘তে ভাটা পড়েছে। পুরো সৈকতে নীরবতা। ব্যবসায়ীদের মধ্যে বিরাজ করছে হতাশা। সামনের দিনগুলো কীভাবে কাটবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তা।

গত ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মহাসমাবেশ ও ৩১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর তিনদিনের অবরোধেকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটা সৈকতে তেমন কোনো পর্যটকদের আনাগোনা ছিল না। এর আগের সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড় হামুনের প্রভাবেও নগরী  ছিল খালি।  ফলে পর্যটন নির্ভর ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত। মৌসুমের শুরুতে এমন খারাপ পরিস্থিতি মোটেই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিতে পারছেন না তাঁরা।

সৈকতে ঘুরতে আসা পর্যটকদের কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে আলোকচিত্র ব্যবসা। এ ব্যবসায় প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী প্রতিদিন পর্যটকদের ছবি তুলে দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এমন একজন আলোকচিত্র কর্মী বলেন, ‘প্রতিদিন ১ হাজার টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা আয় হতো। গত কয়েক দিনে দিন প্রতি ১০০ টাকাও আয় হয় না। বউ-বাচ্চা নিয়ে সংসার চালানো, মাস গেলে বাড়ি ভাড়া দিয়া টিকে থাকা এখন কষ্ট হচ্ছে। এটা থেকে মুক্তি চাই, না হয় না খেয়ে মারা যেতে হবে।’আমরা কুয়াকাটাবাসীর সভাপতি হাফিজুর রহমান আকাশ বলেন, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতায় মূলত পর্যটকদের আনাগোনা কমে গেছে। এতে সরকারও রাজস্ব হারাচ্ছে। দেশের সব পর্যটন মুখ থুবড়ে পড়বে।’

সৈকতের স্পিড বোটের মালিক মো. রাসেল ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আমার ২২ জন কর্মচারী। দিন হিসেবে আমার ২৫ হাজার টাকা লস। গত কয়েক দিনে আমার লাখ টাকা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সামনের দিনগুলো কীভাবে চলব জানি না। করোনার সময় জমানো টাকা সব শেষ। এখন ঋণের বোঝা টানছি। আরও কয়েকটি দিন এমন থাকলে না খেয়ে থাকতে হবে।’

সৈকতে চা বিক্রেতা কালু বলেন, ‘মানুষ রাজনৈতিক দুরবস্থা দেখে ঘর থেকে বের হতেভয় পাচ্ছে। ২৮ অক্টোবর থেকে এখন ১০ কাপ চা বিক্রি হয় না। এমন সংকট আমরা চাই না।

কুয়াকাটায় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি আবাসিক হোটেলের মালিক বলেন, ‘আমরা সবার আগে ধাক্কা খাই। এ ধাক্কা কাটতে সময় লাগবে। এখন রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান না হলে এ সংকট কবে নাগাদ কাটবে তা বলা মুসকিল। আমরা এখান থেকে মুক্তি চাই।’

কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ‘রাজনৈতিক অস্থিরতা থাকলে মানুষ ঘর থেকে বের হয় না। গত কয়েক দিন ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটকেরা মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। এ সংকট দূর না হলে আমরা পথে বসে যাব। হরতাল ও অবরোধে সকল পর্যটন ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। এ অবস্থার উন্নয়নে রাজনৈদিক দলগুলোকে লাগাতর হরতাল অবরোধের বিকপ্ল কর্মসূচি দেয়ার অনুরোধ ভুক্তভোগী সৈকতবাসীর।