মিয়ানমার ইস্যুতে আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
মঙ্গলবার (৫ মার্চ) সকালে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৪’ এর তৃতীয় দিনের কার্য অধিবেশন শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি আস্তে আস্তে খারাপের দিকে যাচ্ছে। তবে আমাদের ওপর আগ্রাসনের কোনো আশঙ্কা দেখি না। তারপরও আমরা প্রস্তুত। আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করবো। আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না।
তিনি বলেন, মিয়ানমারে বিভিন্ন বহিঃশক্তি সম্পৃক্ত হয়ে যাচ্ছে। কোথাও অস্থিতিশীল পরিস্থিতি হলে সবাই এখন নাক গলাতে চায়। আমরা ওই ব্যাপারে (মিয়ানমার পরিস্থিতি) মোটেও নাক গলাতে চাই না। আমাদের জনগণ যাতে শান্তিতে থাকে এবং রোহিঙ্গা যারা আছে তাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সজাগ থাকি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আছে, আমরা বিশ্ব শান্তির জন্য কাজ করবো, আমরা কখনোই আগ্রাসী ভূমিকায় যাবো না। এজন্য প্রতিবেশী দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের খুবই ভালো সম্পর্ক।
তিনি আরও বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে পরিস্থিতি অনেক উদ্বেগজনক। ওখানে সিভিল প্রশাসন যেমন সম্পৃক্ত, তেমনি বিজিবিও সম্পৃক্ত। সেনাবাহিনী ততটা সম্পৃক্ত নয়। কারণ, এখনও যুদ্ধ লাগেনি যে সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ আমরা কোনো সময় আগ্রাসী ভূমিকা নেবো না। কিন্তু আমরা প্রস্তুত, আমাদের ওপর যদি কোনো রকম আক্রমণ আসে, আমরা ব্যবস্থা নেবো। এটা নিয়ে আলাপ হয়েছে।
সীমান্ত হত্যার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, এটা তো পরিকল্পিত কিছু না। এখানে দুই পক্ষেরই দোষ থাকে। আমাদেরও দোষ, বর্ডারের ওপারে যারা থাকে তাদেরও দোষ। এটাকে কিলিং না বলে ইনসিডেন্ট বলা যায়। চোরাচালানকারিরা এতটাই ফেরসাস হয় যে, মাঝে মধ্যে তারা বিএসএফকে আক্রমণ করে বসে। তখন তারা গুলি করতে বাধ্য হয়। আমাদের পক্ষ থেকেও গুলি হয় মাঝে মধ্যে।
ডিসিদের হেলিকপ্টার ব্যবহারের প্রস্তাবের বিষয়ে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে আমরা হেলিকপ্টার ব্যবহার অনেক কমিয়ে দিয়েছি। বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার কারণে তেলের ওপর প্রভাব পড়েছে। যার কারণে হেলিকপ্টার ব্যবহার কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিসিরা বলছিলেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী পান না। এটা হয়তো সাময়িক। তবে যেকোনো সময় যে কারও অসুবিধা হলেই হেলিকপ্টার সাপোর্ট দেওয়া হবে।
সিভিল মিলিটারি রিলেশনশিপের (সিএমআর) বিষয়ে তারিক আহমেদ সিদ্দিক বলেন, সিএমআর যেন আরও উন্নত হয় সেজন্য আলোচনা হয়েছে। এ আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ ছিল। ডিসি ও বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষ থেকে বেশ কিছু প্রস্তাব এসেছে। এটা আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেবো। ওনারাও (ডিসি-বিভাগীয় কমিশনার) চাচ্ছে আমাদের কাছাকাছি আসতে, আমরাও চাচ্ছি ওনাদের কাছাকাছি যেতে। আমাদের মধ্যে সৌহার্দ্য অনেক বেশি। ওনারা আমাদের এখানে ট্রেনিং করতে আসেন, আমরাও যাই। এতে আমাদের বন্ধুত্ব অনেক বেড়ে গেছে।
উল্লেখ্য, এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনের আলোচ্যসূচিতে থাকছে ৩৫৬ প্রস্তাব। প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বাড়ানো, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনে বিকাশ, আইনকানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে।