চট্টগ্রামে আইনজীবী আলিফ হত্যার ঘটনায় জড়িত ইসকনের নেতাকর্মীদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তারের জোর দাবি জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) চট্টগ্রাম নগরের টাইগারপাস মোড়ে আইনজীবী হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে এ দাবি জানানো হয়।
সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, "আমার ভাই সাইফুলকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। ইসকনকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে অবশ্যই নিষিদ্ধ করতে হবে। তারা ধর্মের দোহাই দিয়ে দেশে উগ্রবাদী কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এমন কার্যক্রম বাংলাদেশে কখনো মেনে নেওয়া হবে না।"
তিনি আরও বলেন, "ইসকন কীভাবে স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগের সহায়তায় ভারতের প্রেসক্রিপশনে বাংলাদেশে অশান্তি সৃষ্টি করছে তা আমরা ভুলে যাইনি। ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশে সহাবস্থান নীতির লঙ্ঘন কোনোভাবেই বরদাশত করা হবে না।"
হাসনাত আবদুল্লাহ সমাবেশে অভিযোগ করেন যে, বিদেশ থেকে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদী শক্তি দেশকে অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। তিনি বলেন, "বাংলাদেশের জনগণ এসব ষড়যন্ত্র রুখে দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে। আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন এই দেশে আর হবে না।"
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম। তিনি বলেন, "চট্টগ্রামে ইসকনের কোনো জায়গা হবে না। আমরা ১৬ বছরের খুনি হাসিনাকে দেশছাড়া করেছি। এখন জঙ্গি ইসকনকে দেশছাড়া করাও আমাদের কাছে সহজ কাজ।"
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক আরও বলেন, "বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষের সমান অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের এ আন্দোলন কেবল বৈষম্যের বিরুদ্ধে নয়, বরং শান্তি প্রতিষ্ঠারও জন্য। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।"
সমাবেশে উপস্থিত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাসেল আহমেদ, সহসমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদসহ অন্যান্য নেতাকর্মীরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আইনজীবী আলিফ হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান। তারা জানান, গ্রেপ্তার না হলে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।
সমাবেশে শতাধিক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ এবং তাঁদের উত্থাপিত দাবিগুলো চট্টগ্রামের রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে সমাবেশে প্রশ্ন ওঠে। বক্তারা দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়ে বলেন, "বিচারহীনতার সংস্কৃতি ইসকনের মতো উগ্রবাদী সংগঠনকে উৎসাহিত করেছে।"
চট্টগ্রামের এই হত্যাকাণ্ড দেশের সাম্প্রতিক অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে আরও গভীর করেছে। ইসকনকে কেন্দ্র করে যেসব অভিযোগ উঠেছে, তা সরকারের দ্রুত এবং কঠোর পদক্ষেপের দাবি রাখে।
অন্যথায়, ক্ষোভ আর বিক্ষোভের জোয়ার সামাল দেওয়া কঠিন হবে বলে মত প্রকাশ করেন উপস্থিত নেতারা।
বায়ান্ন/পিএ