আট বছর আগে টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির মেয়াদ ছিল এক বছর। কিন্তু দীর্ঘদিন পার হলেও আর কোন সম্মেলন হয়নি। কোন কমিটিও হয়নি। দীর্ঘদিন কমিটি না হওয়ায় নেতৃত্বে চলে এসেছে স্থবিতা। ঝিমিয়ে পড়েছে ছাত্রলীগের সকল কার্যক্রম। সহযোগি সংগঠন হিসেবে আওয়ামী লীগের কোন কর্মসূচিতেও তাদের দেখা মিলে না। উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ কেউ ব্যবসা বানিজ্য, বিদেশে পাড়ি জমানো, আবার কেউ বা বিয়ে করে সংসার সামলাচ্ছেন।
জানা যায়, মাসুদ রানাকে সভাতি ও হাবিবুর রহমান হাবিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ২০১৪ সালের ১৭ জুলাই দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি গঠিত হয়। কমিটিতে সাতজন সহসভাপতি ও তিনজন যুগ্ম সম্পাদক ও তিনজন সাংগঠনিক সম্পাদ করে এক বছরের জন্য ৬১ বিশিষ্টি কমিটি গঠন করা হয়। বর্তমানে কারও ছাত্রত্ব নেই।
কমিটির সভাপতি মাসুদ রানা উপজেলা বিআরডিবির তিনবারের চেয়ারম্যান। সাধারণ সম্পাদক হাবিব বিবাহিত এবং ব্যবসা করেন ও এক কন্যা সন্তানের পিতা। সহসভাপতি আয়নাল হোসেন আটিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। সহসভাপতি রজব আলী দলে নিস্ক্রীয় বিবাহীত এবং তার সন্তান রয়েছে। সহসভাপতি রুবেল মিয়া ডুবাইল ইউনিয়ন যুবলীগের যুগ্ম আহবায়ক পদে রয়েছেন এবং তিনি বিবাহীত। কানন সরকার রাজনীতির সাথে জড়িত নন। যুগ্ম সম্পাদক মিন্টু বোস, সাংগঠনিক সম্পাদক খোকন মিয়া, জয়নাল আবেদিন কাদের তিনজনেই সরকারি চাকুরী করেন। প্রচার সম্পাদক শুভর রাজনীতিতে কোন সম্পৃক্ততা নেই।
দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জামিলুর রহমান বাবু বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে ২০১৪ সালে তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হুদা নবীন ও সাধারণ সম্পাদক ঈশতিয়াক আহমেদ রাজিব স্বাক্ষরিত এক বছরের জন্য ৬১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয়। কমিটিতে আমি সহসভাপতি ছিলাম। আমার বয়স হয়েছে। বিয়ে করেছি। ছাত্রত্বও নেই। সম্মেলনের মাধ্যমে ভাল একটি কমিটি হোক এটাই আমার প্রত্যাশা।
দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আয়নাল হোসেন বলেন, এই মেয়াদ উত্তীর্ন কমিটির কারও ছাত্রত্ব নেই। কমিটির নেতৃবৃন্দকেও নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। নতুনদের নেতৃত্ব বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়ার জন্য দ্রুত সম্মেলন হওয়া প্রয়োজন। যারা নেতৃত্ব দিয়ে উপজেলা ছাত্রলীগকে সুসংগঠিত করে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, অভ্যন্তরীন নানা কারণে এতদিন সম্মেলন হয়নি। আমরাও চাই দ্রুত সম্মেলনের মাধ্যমে নেতৃত্ব পরিবর্তন হোক।
দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাসুদ রানা বলেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য আহসানুল ইসলাম টিটুর পরামর্শক্রমে নেতৃত্বে গতিশীলতা আনতে দ্রতই সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রীগের কমিটি গঠন করা হবে।
টাঙ্গাইল জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস হোসেন বলেন, দেলদুয়ার উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন করার জন্য ইতিমধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে কথা হয়েছে। তাদের পরামর্শ ক্রমে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ করা হবে।
দেলদুয়ার উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শিবলী সাদিক বলেন, আওয়ামী লীগের মূল শক্তি ছাত্রলীগ। দীর্ঘদিন একই কমিটি থাকায় দলের সবাই নিস্ক্রীয় হয়ে পড়েছে। নেতৃত্ব বিকাশেও বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। এছাড়াও কমিটির সভাপতিকেও নিয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। তাই দ্রুত এই ঝিমিয়ে পরা কমিটি বাদ দিয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব সৃষ্টি করা প্রয়োজন।