রাজধানীর কাকরাইল মোড়, হাইকোর্ট এলাকা ও প্রধান বিচারপতির বাসভাবনের সামনে সংর্ঘষের ঘটনা ঘটেছে। প্রধান বিচারপতির বাসভবনের গেটে বিএনপির কর্মীরা ভাঙচুর চালিয়েছে। দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনার সূত্রপাত।
এদিকে শনিবার দুপুর দেড়টার পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীসহ চার জন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক) চিকিৎসক নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া।
প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে অবস্থানরত বাংলা ট্রিবিউনের প্রধান প্রতিবেদক সালমান তারেক শাকিল জানান, প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাছের ডাল ভেঙে ও হাতের লাঠি দিয়ে নামফলক, গেটে হামলা চালায়। তারা ভেতরে ইট পাটকেল ছুঁড়তে থাকে।
এর মধ্যে কাকরাইল ট্রাফিক পুলিশ বক্সে আগুন দেয় বিএনপির অনুসারীরা। পুলিশ বাধা দিতে গেলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংর্ঘষ বাধে।
এই ঘটনার রেশ ধরে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর থেমে থেমে সংঘর্ষ চলছে।
রমনা বিভাগের এক কর্মকর্তা বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, বিএনপি সমর্থকদের ছত্রভঙ্গ করতে বেশ কয়েক দফায় টিয়ারশেল ছোড়া হয়। দুটি মোটরসাইকেলে আগুন দেয় বিএনপির সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ে একটি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ করছে পুলিশ।
এদিকে, রাজধানীর হাইকোর্ট মাজারের সামনে হামলায় মো. সুজন (২৬) নামে এক যুবলীগ কর্মী আহত হয়েছেন। অন্যদিকে কাকরাইল মোড় এলাকায় বৈশাখী বাস ভাঙচুরের ঘটনায় মোহাম্মদ নাসির (২৫) নামে এক বাস যাত্রী আহত হন।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) বেলা ১২টার দিকে মো. সুজন (২৬) ও মোহাম্মদ নাসিরকে (২৫) উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
সুজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো. সোহেল জানান, পল্টন থেকে হাইকোর্টের দিকে আসার পথে অজ্ঞাত কয়েকজন সুজনের ওপর হামলা চালায়। এসময় সুজনকে ছুরিকাঘাতে ও মাথায় আঘাত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন রয়েছেন।আহত সুজনের বাসা বনানীর করাইল আদর্শ বস্তি এলাকায়।
অন্যদিকে সকাল ১১টার দিকে কাকরাইলে রাজধানীর মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের সামনে বৈশাখী বাস ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে কে বা কারা বাসটিতে ভাঙচুর চালিয়েছে তা নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। বাসযাত্রী নাসিরকে হাসপাতালে নিয়ে আসা মো. মুক্তা জানান, বৈশাখী বাসে অজ্ঞাতনামা কয়েকজন যুবক হামলা চালায়। এতে বাসে থাকা নাসির আহত হন। পরে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তিনি ঢামেকে চিকিৎসাধীন।
রাজধানীর আরামবাগে পুলিশের গুলিতে জামায়াত ইসলামীর এক কর্মী আহত হয়েছে। তার নাম নওয়াব আলী শেখ (৬০) । শনিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। আহত নওয়াব আলী শেখ নিজেকে জামায়াত কর্মী দাবি করে বলেন, দুপুরে আরামবাগে পুলিশ ব্যারিকেড দেয়। সেটা অতিক্রম করার সময় পুলিশ গুলি ছোড়ে। এতে আমার ডান পায়ে গুলি লাগে।
নওয়াব আলী শেখকে ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসা পথচারী সোহাগ বলেন, আহত রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে ছিলেন তিনি। পরে সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে দুপুর সোয়া ১টার দিকে চিকিৎসার জন্য ঢামেকে আসি।
অপর দিকে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে গুলিস্তান পরিবহন গাড়িতে হামলায় বিএম রাজু কামাল (৫০) নামের এসেনশিয়াল ড্রাগ এর কর্মী আহত হয়েছেন। তিনি বলেন সাতরাস্তা মোড় থেকে গাড়িতে উঠি গুলিস্তান যাওয়ার উদ্দেশে। পথে দুপুর সাড়ে ১২টায় কাকরাইল মসজিদের আগে রাস্তায় গাড়ির মধ্যে হামলার শিকার হই।
ঢামেক পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন আহত দুজনের ঢামেক জরুরি বিভাগে চিকিৎসা চলছে।