ঢাকা, শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ই মাঘ ১৪৩১

কোনো আপস নেই, নির্বাচন হতেই হবে: তারেক রহমান

রিয়াদ হাসান | প্রকাশের সময় : শুক্রবার ৩১ জানুয়ারী ২০২৫ ০২:৫২:০০ অপরাহ্ন | রাজনীতি

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, আমরা যদি সামগ্রিকভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে না পারি, তাহলে কোনোভাবেই সমস্যার সমাধান করতে পারব না। নির্দিষ্ট সময়ের পর যত ঝড়, তুফান, বন্যা, বৃষ্টি যা-ই হোক না কেন, নির্বাচন হতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। কোনো আপস নেই, নির্বাচন হতেই হবে।

বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) চুয়াডাঙ্গায় রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি। কর্মশালায় চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলার ৬ শতাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।

তারেক রহমান বলেন, দেশকে লুটপাটের সঙ্গে সঙ্গে ভেঙে চুরে শেষ করে রেখে গেছেন ফ্যাসিস্ট হাসিনা। বিএনপির দেওয়া ৩১ দফার ভিত্তিতে অবিলম্বে দেশটাকে মেরামত করা জরুরি। প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে হবে।

তিনি বলেন, আমরা অনেক ভালো ভালো কথা আলোচনা করছি। সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ, সরকারের উপদেষ্টা, প্রধান উপদেষ্টাসহ সবার কাছ থেকে ভালো কথাবার্তা শুনছি। দিনশেষে জনগণ জিজ্ঞেস করবে দ্রব্যমূল্যের কী অবস্থা, নির্বাচনের কী খবর?

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচন হোক, লোকাল পর্যায়ে নির্বাচন হোক, কোনো প্রতিষ্ঠানের হোক, যেখানে যেখানে নির্বাচনের বিধান আছে সেখানে জনগণকে নির্ধিদ্বায়, নির্বিগ্নে, শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের ব্যবস্থা করতে হবে। সমাজে জবাবদিহিমূলক নির্বাচন ব্যবস্থা তৈরি করতে না পারলে সব বৃথা।

আগামীতে বিএনপির পক্ষ থেকে কৃষকদের উন্নয়ন ও তাদের কৃষিকাজে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, কৃষকদের ‘ফার্মার্স কার্ড’ করে দেওয়া হবে। এর ফলে তারা ভর্তুকি, সারবীজ, পরিবারের চিকিৎসা সেবাসহ যাবতীয় সুযোগ সুবিধা পাবেন। স্বাস্থ্যসেবায় বেশি সংখ্যায় মেয়েদের প্রশিক্ষণ দিয়ে এ খাতকে এগিয়ে নিতে হবে। দেশে ৭০ হাজার প্রশিক্ষিত নার্স আছে। চিকিৎসা খাতে প্রতি বছর কয়েক বিলিয়ন ডলার বিদেশে চলে যায়, এগুলো বন্ধ হওয়া দরকার।

তারেক রহমান বলেন, শ্রমিক মালিক এক হয়ে ভাই ভাই হয়ে উন্নয়ন সাধন করতে হবে। বিএনপির দেওয়া রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে। ভবিষ্যতে এটির বাস্তবায়ন করতে হবে। বিদেশে জনশক্তি রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের যে দক্ষ জনশক্তি রয়েছে সেই জনশক্তি রপ্তানি করতে হবে।

তিনি বলেন, শিক্ষিত অনার্স মাস্টার্স পাস করে কোনো তরুণ তরুণী যেন তার পরিবারের কাছে বোঝা না হন। তাদেরকে ন্যূনতম এক বছর বেকার ভাতা প্রদান করা হবে, যাতে করে তারা এ সময়টাতে চাকরি খোঁজার জন্য অনুকূল পরিবেশ পান। মানুষকে হার্টের পরীক্ষা নিরীক্ষাসহ সামগ্রিক চিকিৎসার জন্য আমেরিকার চিকিৎসা পদ্ধতির আলোকে উপজেলা পর্যায়ে চিকিৎসা সেবার বিরাট বিস্তার ঘটানো হবে।

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহগণশিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক আনিসুর রহমান খোকনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবু। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহাদি আমিন।

এ সময় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপির সহ-ত্রান ও পুনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট হালিমা আর্লী, সহ স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আক্তার, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ, চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফ, মেহেরপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাভেদ মাসুদ মিল্টন, সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন- চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির নেতা অ্যাডভোকেট ওয়াহেদুজ্জামান বুলা, খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক রউফুন নাহার রিনা, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপি সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক রফিকুল হাসান তনু, চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম মনি, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলী, দর্শনা পৌর বিএনপি নেতা হাবিবুর রহমান বুলেট, নাহারুল ইসলাম, জেলা কৃষক দলের সভাপতি মোকাররম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ হাসেন জোয়ার্দ্দারসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

বায়ান্ন/আরএইচ/একে