চট্টগ্রামের বায়েজিদে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে একটি দেশিয় এলজি, ডাকাতির সরঞ্জামাহি ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামি থানার কুলগাঁও খলিল শাহ মাজার সংলগ্ন একটি বাড়ির দোতলা থেকে ডাকাতি প্রস্ততিতিকালে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন-মো. আসিফ (২২), মো. হাসান (২০), মো. ফয়সাল (১৯), মো. আজিম উদ্দিন (২৩), মো. রিফাদ (১৯) এবং মো. জুয়েল (২০)।
পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, সোমবার কুলগাঁও খলিল শাহ মাজার সংলগ্ন তিন রাস্তার মোড় জনৈক ইউসুফের বাড়ির দ্বিতীয় তলায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এসময় তাদের হেফাজত থেকে ১টি দেশীয় তৈরী এলজি, ৩টি হাসুয়া, ৬টি কিরিচ, ২টি চাইনিজ কুড়াল, ২টি কাটার, ১টি ড্রিল মেশিন, ৬টি এন্ড্রয়েড মোবাইল, ৪টি বাটন মোবাইল, ৫টি ডেমো মোবাইল, ১টি ইলেকট্রিল শট, ১টি মনিটর, ৩টি হাতঘড়ি, ৮টি এটিএম কার্ড, ১টি হ্যান্ড ব্যাগ, ১টি সাদা প্লাস্টিকের বস্তা উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার নগরের দামপাড়া পুলিশ লাইন্সের মিডিয়া সেন্টারে নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (জনসংযোগ) রইছ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, ‘গ্রেপ্তারকৃতরা মূলত বায়েজিদ এলাকার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের সহযোগী। তাদের বিরুদ্ধে নগরের বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। এই ৬ জনকে গ্রেপ্তারে অভিযানের খবর টের পেয়ে আরও ৩ থেকে ৪ জন পালিয়েছে। তাদেরও আমরা গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালাচ্ছি। আসিফ নামে যে ডাকাত রয়েছে তিনি হচ্ছেন সর্দার। ওই এলাকায় তার নেতৃত্বেই ডাকাতির প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিলো।’
বায়েজিদ এলাকার তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদের গ্রেপ্তার প্রসঙ্গে পুলিশ কর্মকর্তা রইছ উদ্দীন তাকে গ্রেপ্তার প্রচ্ষ্টো চলছে উল্লেখ করে বলেন, অপরাধীদের চেইন অব কমান্ড বা শক্তিশালী বিষয়টি এমন নয়। আইনের চোখে অপরাধী অপরাধীই। তার মধ্যে ভীতি কাজ করবেই। আমাদের মনে হয় না তার শক্তি থাকার কথা। যেখানেই যে পরিচয়েই যে কেউ অপরাধ করুক আমরা তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসবো।
উপ-কমিশনার রইছ উদ্দিন বলেন, সাজ্জাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। আমাদের কাছেও এমন তথ্য রয়েছে। এর প্রমাণ আমরা পেয়েছি। আমরা তাকে গ্রেপ্তার করতে যখন গিয়েছিলাম তখন এসব অস্ত্র ব্যবহার করেই সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিল। তাকে দ্রুত গ্রেপ্তার করা এবং তার কাছ থেকে
অবৈধ অস্ত্রগুলো উদ্ধার করাই আমাদের প্রথম টার্গেট। অপরাধীদের ধরতে সম্প্রতি পুলিশের অভিযানের সফলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত ২৩ তারিখ থেকে প্রত্যেক থানা এলাকাতে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। যেসব এলাকা অপরাধপ্রবণ সেগুলোকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি বেশী। অপরাধি গ্রেপ্তারে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও নজরদারি বৃদ্ধি করেছি। আমাদের বড় ধরনের সফলতা রয়েছে। গত ৫ দিনে মোট ১৩১ জন ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করেছি এবং বিভিন্ন জুয়ার আসরে অভিযান চালিয়ে ৯৩ জন জুয়াড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা বেশ কিছু মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার এবং মাদক উদ্ধার করেছি।
সোমবার গ্রেপ্তার ডাকাতদের হেফাজত থেকে একটি দেশি এলজি, ড্রিল মেশিন, কাটার মেশিন, কিরিচসহ ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। আমরা এ অভিযান পরিচালনা করে বেশকিছু মোবাইল পেয়েছি। এছাড়াও তাদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ এটিএম কার্ড পাওয়া গেছে। তাদের মূল হোতা এবং ডাকাতির কার্যক্রমের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আনয়ন প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বায়ান্ন/প্রতিনিধি/একে