ঝিনাইদহে কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) সকালে শহরের উজির আলী স্কুল এন্ড কলেজ মাঠে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় আন্দোলনকারী অন্তত ১১ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
আহতরা হলেন- সরকারি কেসি কলেজের শিক্ষার্থী শারমীন সুলতানা, আল-মামুন, সাদিয়া জেরিন, নুসরাত জাহান সাথি, সাজ্জাদ হুসাইন, হিরক হোসেন, সিটি কলেজের শিক্ষার্থী রিহান হোসেন, রিমি খাতুন, শৈলকুপা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী মানিক হোসেন, বাঙলা কলেজের মাহিন হোসেন ও কোটচাঁদপুর সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী শিখন খান।
শিক্ষার্থী ও প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানায়, কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে সকালে বিক্ষোভ মিছিল করার জন্য শহরের উজির আলী স্কুল মাঠে জড়ো হন শিক্ষার্থীরা। সেসময় শহরের পায়রা চত্বর এলাকা থেকে ছাত্রলীগের একটি মিছিল লাঠিসোঁটা নিয়ে পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তারা লাঠি, রড দিয়ে শিক্ষার্থীদের মারধর করে ব্যানার কেড়ে নেয়। ভাঙচুর করে মাইক।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে ছাত্রলীগ সেখান থেকে মিছিল সহকারে ফিরে যায়। হামলায় কমপক্ষে ১১ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
হামলার শিকার আহত শিক্ষাথী শারমীন সুলতানা বলেন, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের জন্য ওযাজির আলী স্কুল মাঠে প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। সেসময় অর্তকিতভাবে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা অস্ত্র-শস্ত্র আমাদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমাদের অনেক সহযোদ্ধা আহত হয়েছেন। আমরা এর বিচার চাই।
কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীর আবু হুরায়রা জানান, কোটাবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে সকালে শহরের উজির আলী স্কুল মাঠে জড়ো হয় শিক্ষার্থীরা। সেসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করে। আমরা নিরীহ শিক্ষার্থী। আমাদের ওপর এমন বর্বর হামলা করা হয়েছে। আমাদের ১০/১১ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে।
ঘটনার বিস্তারিত জানতে ঝিনাইদহ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব ও সাধারণ সম্পাদক আল ইমরানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়াকে মোবাইলে কল দেয়া হলে তিনি কল রিসিভ করেন নি।
তবে ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন উদ্দীন বলেন, ‘সকালে কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের শহরের উজির আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে জড়ো হন। সেময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা একটি মিছিল নিয়ে যাওয়ার পর একটু উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। এরপর পরই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।’