নরসিংদীর রায়পুরায় ভাগ্নির বিয়েতে মেহমানদের খাওয়ানোর জন্য ক্রয়করা গাভী (গাই গরু) নিয়ে রসিকতা করার জেরে প্রতিপক্ষের মারধরে আবু কালাম (৫৫) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্ববর) রাত আনুমানিক ৮টার দিকে উপজেলার অলিপুরা উত্তরপাড়া এলাকায় হায়দার আলীর মুদি দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আবুল কালাম একজন কৃষক ছিলেন এবং একই এলাকার মৃত নুর চাঁন মিয়ার ছেলে।
পারিবারিক ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আগামী সোমবার আবু কালামের এক ভাগ্নির বিয়ে। ওই বিয়েতে কনে ও বরপক্ষের মেহমানদের খাওয়ানোর জন্য একটি গাভী কেনেন তার ভগ্নিপতি। গত রাতে এশার নামাজ শেষে বাড়ির পাশে হায়দার আলীর দোকানে চা খেতে যান কালাম। ওই সময় সেখানে ছিলেন একই এলাকার মৃত সোলেমান মিয়ার ছেলে জয়ধর আলীসহ ৩/৪জন। এসময় সবার সামনেই বিয়ের জন্য আনা গরু নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করছিলেন জয়ধর। গাভীর কথা জানাজানি হলে ভগ্নিপতির ইজ্জত যাবে ভেবে জয়ধরকে এ ধরনের সমালোচনা না করতে বারণ করেন তিনি। এতে তার প্রতি ক্ষিপ্ত হন জয়ধর। এ নিয়ে দুজনের কথা কাটাকাটির জেরে কালামের কান বরাবর সজোরে থাপ্পড় মারেন জয়ধর। পরে তার ভাই ইমান আলীসহ চার থেকে পাঁচ মিলে কালামকে ঘিরে ধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল-ঘুষি ও লাথি দেন। এতে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে তাকে উদ্ধার করে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় তার। এ ঘটনার পর ঘরে তালা দিয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন অভিযুক্ত জয়ধর আলীসহ তার পরিবার ও জড়িত বাকি ব্যক্তিরা।
নিহতের মেয়ে রুনা আক্তার বলেন, বিয়েতে আসা মেহমানরা জানতে পারলে ওই গাভীর মাংস নাও খেতে পারেন। তাই এ নিয়ে লোকজনের সামনে সমালোচনা না করতে জয়ধরকে বারণ করেছিলেন বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বাবার কানে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে থাপ্পড়, কিল-ঘুষি ও লাথি দিয়ে মাটি ফেলে দেন তারা। ওই সময় তিনি শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পরে স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের কাছে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় বাবার। এ ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
এ ব্যাপারে রায়পুরা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আজিজুর রহমান নিহতের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।