ঢাকা, বৃহস্পতিবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০শে কার্তিক ১৪৩১
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েতে

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি

আহমেদ শাহেদ, এম এম লিংকন, রিয়াদ হাসান | প্রকাশের সময় : রবিবার ১০ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:৪২:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

রাজধানীর জিরো পয়েন্টে গতকাল রোববার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের গণজমায়েতে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। সমাবেশে আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক সারজিস আলম ও হাসনাত আবদুল্লাহ আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ফ্যাসিবাদের অভিযোগ তুলে দলটির বিচার দাবি করেন। ক্ষমতাচ্যুত দলটি এদিন নির্ধারিত সমাবেশ ডেকেও মাঠে উপস্থিত হয়নি। সকাল থেকে গোটা গুলিস্তান এলাকা ছিলো বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও বিএনপির নেতাকর্মীদের নিয়ন্ত্রণে।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধ মঞ্চের আয়োজনে এই গণজমায়েত কর্মসূচি শুরু হয়। কর্মসূচির শুরুতেই আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বক্তব্যে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, “ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সঙ্গে মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত। তবে আমাদের মধ্যে ঐক্য ধরে রাখতে হবে। ঢাকা কলেজের ছাত্ররাই ছাত্রলীগকে প্রতিরোধ করতে যথেষ্ট।”

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেছেন, রাজনৈতিক বিভাজন ভুলে আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কিছু সুশীল ১৬ বছরকে ভুলে ৩ মাসের পেছনে লেগেছে।

এ সময় সারজিস আলম আওয়ামী লীগের ১৬ বছরের অত্যাচার-নির্যাতন এবং বর্বরতার কথা তুলে ধরেন। এছাড়া তিনি ৫ আগস্টের পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে বিতর্কিত করার অপচেষ্টারও কঠোর প্রতিবাদ ও নিন্দা জানান।

আন্দোলনের পরিপূর্ণ ফল ঘরে তুলতে সুশীল সমাজকেও এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক বলেন, ১৬ বছরের অপকর্মের কথাগুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে সুশীল সমাজকে অনুরোধ জানাচ্ছি।

এর আগে শহীদ নূর হোসেন দিবসে সকাল থেকে নূর হোসেন চত্বরে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করে।

এসময় তারাও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি তোলেন এবং শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান।

এদিন বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির নেতাকর্মীরা ছোট-বড় মিছিল নিয়ে আসেন এবং বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগ সমর্থকদের কয়েকজনকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মতিঝিল বিভাগের উপ কমিশনার মো. শাহরিয়ার আলী জানান, সকাল থেকে আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও নূর হোসেন চত্ত্বর এলাকা থেকে সন্দেহভাজন ১২ জনকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারীরা সন্দেহ হলেই ব্যক্তিদের আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করছে।

শহীদ নূর হোসেন দিবসে আওয়ামী লীগ তাদের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের কর্মসূচির ঘোষণা দেয় এবং জিরো পয়েন্টে বেলা তিনটায় জমায়েতের আহ্বান জানায়। তবে নির্ধারিত সময়ে দলের নেতাকর্মীদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি দেখা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জিরো পয়েন্ট ও আশপাশের এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিলেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকা জুড়ে সাজোয়া যান ও জলকামান প্রস্তুত রাখা হয়।

বায়ান্ন/একে