ঢাকা, মঙ্গলবার ৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯শে অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ভোলার কৃষক দিশেহারা

ভোলা প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : শনিবার ১১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৬:০৯:০০ অপরাহ্ন | অর্থনীতি ও বাণিজ্য

ভোলা জেলার ৭ উপজেলায় এবার আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। ভাল দামও ছিল, বিগতদিনের লোকশান পুশিয়ে ঘুড়ে দাড়ানোর আশা করেছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু অসময়ের বৃষ্টিতে পানির সাথে মিশে গেছে ক্ষেতের ফসল, মুহুর্তের মধ্যে কৃষকের স্বপ্ন ভেঙ্গে চুমার হয়ে গেছে,দিশে হারা, তাদের আর কিছু রইলনা,ভেঙ্গে পরেছেন তারা।বেশী ক্ষতি হয়েছে নিন্মাঞ্চল ও চরগুলোতে। ধান কেটে ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে। এখন আর ঘুরে দাড়াবার সম্ভাবনা নাই বলে হতাশ প্রকাশ করলেন কৃষকেরা। শনিবার (১১ ডিসেন্বর) কৃষকদের ও কৃষি কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে এসব তথ্য জানা গেছে। 

চরফ্যাশনের কৃষক আলাউদ্দিন, লালমোহনের বাবুল, তজুমদ্দিনের খায়রুল, বোরহান উদ্দিনের মামুন, দৌলতখানের সিরাজ, সদরের সেলিমসহ কয়েকশত কৃষক জানান, চলতি আমন মৌসুমে কৃষকের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফসলের ক্ষেতে এখন পাকা ধানের সমারোহ। কাটা এবং মাড়াইও শুরু হয়েছে, একর প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ মন করে ফসল ঘরে তুলতে পারতেন। ১০ দিনের মধ্যে সব ধান ঘরে তুলতে পারতেন। কৃষকের মুখে হাসি আর আনন্দ ছল ছল করছিল, আশা করেছেন বিগতদিনের লোকশান পুশিয়ে ঘুড়ে দাড়াতে পারবেন। কিন্তু অসময়ের প্রবল বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাশে ক্ষেতের ফসল পারি আর মাটির সাথে মিশে গেছে, পচন ধরেছে ধানে। মেশিন দিয়ে অল্প খরচে ধান কাটা ও মাড়াই করার সুযোগ আরথাকছেনা। এখন পানির মধ্যে ধান। কাটার লোক (লেভার) পাওয়া যায়না। আর পাওয়া গেলেও মুজুরি দিতে হয় ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। তাও পুরা দিনে একজনে ৩ মন ধান কাটতে পারেনা। ধান কেটে ক্ষেতে ফেলে রাখা হয়েছে। আর পানি পাওয়ায় ধানের দামও কমে গেছে। পাইকারেরা ধান কিনতে চায়না। কিনলেও নগদ টাকা দিতে দেয়না। ধান বিক্রি করে পাইকারদের পিছু পিছু ঘুরতে হবে। সব মিলিয়ে অসময়ের বৃষ্টির কারনে (প্রকৃতিক দুর্যোগ)কৃষকের মেরুদন্ড ভেঙ্গে গেছে, চিন্তিত হয়ে পরেছেন তারা। এখন অনেকেই ব্যাংক ও এনজিওর দেনা পরিশোধ  এবং পরিবা পরিজন নিয়ে দুবেলায় দুমুঠো কিভাবে খাবে, সংসার চালাবে তার জন্যও বেশ চিন্তিত হয়ে পরেছেন। ব্যাংক নোটিশ দিয়েছেন দেনা পরিশোধ না করে মরবেননা এবং পরিবারকে ঝুকিতে ফেলবেননা। তাছাড়া কয়েক লক্ষ্য টাকা ব্যয় করে রবিশস্য, আলু,তরমুজ, মরিচ, পিয়াজ বীজতলা, সরিশাসহ বিভিন্ন ফসলের আবাদ করেছে। পানিতে সব কেড়ে নিয়ে গেছে, দ্বিতীয়বার এ বছর আর এসব ফসল হবেনা। 

জেলা কৃষি অফিসার জানান, চলতি বছরে ভোলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৫৫ হেক্টর জমিতে। তার বিপরীতে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ৭৯ হাজার ৩৭৮ হেক্টর জমিতে। যা থেকে ৫ লাখ ৭৪ হাজার ১০ মেট্রিক টন চাল উৎপাদন হতো। কিন্তু অসময়ে প্রবল বৃষ্টির কারনে কিছু আমন, রবিশস্য অনেক ক্ষতি হয়েছে, তাই ফসল কিছু কম হতে পারে। তবে ক্ষতির পরিমান নিরুপনের কাজ চলছে।