রমজান মাস শুরু হতেই সিলেটে অপরাধী চক্র সক্রিয় হয়ে উঠতো। ছিনতাই, রাহাজানী, চাঁদাবাজি ইত্যাদি অপরাধ কর্মকান্ডে সিলেটের শান্ত পরিবেশ অশান্ত হয়ে উঠত। অনেক সময় রক্তাক্ত হতো রাজপথ। ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে শঙ্কায় থাকতেন। নাগরিকরা ছিনতাইকারীর ভয়ে থাকতেন আতঙ্কিত। এসব অপরাধীর কারণে অনেক সময় লাশও পড়েছে। কিন্তু এবার দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। ওইসব অপরাধীদের টিকিটিও দেখা যায়নি সিলেটে। যে কারণে পুরো মাসজুড়ে স্বস্তি ছিল নগরবাসীর মধ্যে। পুরো মাসজুড়ে পর্যবেক্ষণ করা হয় সিলেটের রমজান মাস ও ঈদ বাজার। অপর্যবেক্ষণে ওই চিত্র দেখা গেছে।
রমজান শুরু হওয়ার ১৫-২০ দিন আগেই সক্রিয় হয়ে উঠেন সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। আইনশৃঙ্খলা সংস্থার উর্ধ্বত কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সেক্টরের কর্তাদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করেন। প্রথমে সিলেট নগরীর ভাসমান ব্যবসায়ীদের বিষয়ে পদক্ষেপ নেন। ভাসমান ব্যবসায়ীদেরকে রাজপথ থেকে সরিয়ে নেয়ার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। নতুন ঠিকানা তৈরি করে সেখানে সরিয়ে নেয়া হয় ভাসমান হকারদের। রমজান মাস শুরুর ১০দিন আগে নেয়া ওই পদক্ষেপের কারণে পুরো নগরী হয়ে উঠে হকারমুক্ত। পরিচ্ছন্ন নগরীতে রূপ নেয় সিলেট। সাধারণ মানুষের প্রশংসায় সিক্ত হন মেয়র। ওই পদক্ষেপ নেয়ার পরপরই মেয়র আনোয়ারুজ্জামান ঘোষণা দেন সিলেটের ঈদের বাজারে অপরাধীদের কোনো ঠাঁই হবে না। নগরবাসীসহ ব্যবসায়ীদের আশ^স্ত করেন অপরাধমুক্ত হবে সিলেটের ঈদবাজার। মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বক্তব্যকে বিশ^াসযোগ হিসেবে মেনে নেন নগরবাসী।
সূত্র জানায়, মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী কয়েক দফা বেঠক করেন পুলিশ প্রশাসেনর সাথে। ওইসব বৈঠকের পর পরিকল্পিতভাবে মাঠে নামে পুলিশ। অপরাধীদের তালিকা ধরে গ্রেফতার অভিযান শুরু হয়। নগরীর সিংহভাগ অপরাধীকে পাকড়াও করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তাদেরকে পাঠানো হয় কারাগারে। এখনো তারা কারাবন্দি। অভিযানের শুরুতেই হাতেগোনা কিছু অপরাধী আত্মগোপনে চলে যায়। আজো তারা রয়েছে আত্মগোপনে। ফলে পুরো নগরী হয়ে উঠে অপরাধীমুক্ত। রমজানের ঈদবাজার কাটে নিরাপদে।
এনিয়ে উচ্ছ¡সিত নগরবাসী। অনেকে বলেছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর মেধাবী পরিকল্পনায় অপরাধমুক্ত হয়েছে নগরী। যা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। এমন পরিবেশ অটুট রাখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
সিলেট নগরীর শাহপরাণ এলাকার ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম আতিক জানান, এবারের ঈদবাজার ছিল নিরাপদ। কোনো হানাহানির ঘটনা ঘটেনি। ছিনতাইকারীদের অস্থিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। চাঁদাবাজমুক্ত ছিল ঈদবাজার। আমরা ব্যবসায়ীরা ওই নিরাপদ পরিবেশের কারণে পুরো রমজান মাস জুড়ে ভালো ব্যবসা করেছি। ক্রেতারা নির্বিঘেœ কেনাকাটা করেছেন। গভীর রাত পর্যন্ত চলাফেরা করেছেন অপরাধমুক্ত পরিবেশে। এই ধরণের পরিবেশ অতীতে কোনোদিন তিনি দেখেননি বলে জানান। তিনি বলেন, সিলেট নগরীর মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ব্যবসায়ীদের আশ^স্ত করেছিলেন নির্বিঘেœ ঈদবাজার কাটবে। মেয়রের নেতৃত্বে তা বাস্তবায়িত হয়েছে। এজন্য আতিকুল ইসলাম আতিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীকে।