চলতি বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। চলে যান প্রতিবেশী দেশ ভারতে। এতোদিন সেখানেই থাকলেও সম্প্রতি গুঞ্জন ছড়িয়েছে শেখ হাসিনা ভারত ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে চলে গেছেন।
শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হলেও এ বিষয়ে ভারত ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারও কোনো তথ্য নিশ্চিত করেনি। ফলে শেখ হাসিনা কোথায় আছেন সে বিষয়ে সরকার নিশ্চিত নয় বলে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে আসছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ভারত থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাত চলে গেছেন। সে ব্যাপারে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওয়াকিবহাল কি না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওনার (শেখ হাসিনা) অবস্থান সম্পর্কে আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। আমরা দিল্লিতেও খোঁজ করেছি, আমিরাতেও খোঁজ করেছি। কনফারমেশন অফিসিয়ালি কেউ দিতে পারেননি। তবে আপনারা যেমনটি দেখেছেন আমরাও দেখেছি উনি আজমানে সম্ভবত গেছেন। কিন্তু সেটা রি-কনফার্মের চেষ্টা করেও আমরা সফল হইনি।
বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে দেখলাম আমেরিকার চাপেই ভারত সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে পাঠিয়ে দিয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এটা আমি বলতে পারবো না, আমেরিকাকেই জিজ্ঞেস করুন।
তবে মঙ্গলবার বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনা এখনও ভারতেই অবস্থান করছেন বলে জানা যাচ্ছে। তিনি দিল্লি ছেড়ে মধ্যপ্রাচ্যের কোনো দেশে চলে গেছেন, এ জাতীয় সব খবরকে ‘সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ভারতের শীর্ষস্থানীয় সরকারি কর্মকর্তারা।
দিল্লি থেকে বিবিসি বাংলার সংবাদদাতা শুভজ্যোতি ঘোষ জানান, তিনি গত আটচল্লিশ ঘণ্টায় বিষয়টি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিক সূত্রের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তারা প্রত্যেকে নিশ্চিত করেছেন ‘শেখ হাসিনা এখানে গত সপ্তাহে যেভাবে ছিলেন, এই সপ্তাহেও ঠিক একইভাবেই আছেন!’
তিনি দিল্লিতে ঠিক কোথায় অবস্থান করছেন তা ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে কখনওই জানায়নি, কিন্তু সেই ‘লোকেশন’ যে গত কয়েকদিনের ভেতরে মোটেও পাল্টায়নি, সে কথাও জানানো হয়েছে।
দিল্লির সাউথ ব্লকে একটি উচ্চপদস্থ সূত্র বিবিসির কাছে এমনও বলেছেন, ‘যে পরিস্থিতিতেই আসুন না কেন, শেখ হাসিনা এই মুহূর্তে ভারতের সম্মানিত অতিথি। তিনি যদি পরে তৃতীয় কোনো দেশে যানও, সেটা নিয়ে আমাদের লুকোছাপা করার তো কোনো কারণ নেই!’
ফলে শেখ হাসিনা গোপনে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো কোনো দেশে পাড়ি দিয়েছেন, এসব ‘খবর’কে উপেক্ষা করতেই পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।