পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকসাদুদ-জামান গড়ে তুলেছিলেন একটি ডাকাতদল। যার নেতৃত্বে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় সংগঠিত হয়েছে একাধিক ডাকাতি। কর্তৃপক্ষের অগোচরে খোদ সিআইডির গাড়িই ডাকাতিতে ব্যবহার করতেন আকসাদুদ।
২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর বিমানবন্দর সড়কের কাওলায় সংগঠিত একটি ডাকাতির ঘটনায় দায়ের করা মামলার তদন্ত শেষে অভিযোগপত্রে এমন তথ্যই উঠে এসেছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ মে) আদালতে অভিযোগ পত্রটি দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী সংস্থা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যেখানে আকসাদুদের নেতৃত্বে পরিচালিত ওই ডাকাত দলের সঙ্গে নয় জনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।
আকসাদুদ বাদে অভিযোগপত্রে উল্লেখিত অন্যান্য আসামিরা হলেন, মোশাররফ হোসেন, হাসান রাজা, সেলিম মোল্লা, রিপন মোড়ল, আমির হোসেন তালুকদার, রিজু মিয়া শিকদার, মনির হোসেন ও মিলন মিয়া। এদের মধ্যে মনির ও মিলন পলাতক রয়েছেন।
আকসাদুদসহ বাকি সাতজন গ্রেফতার হলেও সম্প্রতি কারাগার থেকে তারা জামিনে মুক্ত হন। এদের মধ্যে হাসান রাজা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন।
হাসান রাজার বিরুদ্ধে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে তিনটি এবং সেলিম মোল্লার বিরুদ্ধে চারটি ডাকাতির মামলা রয়েছে। আরেক সহযোগী রিপন মোড়ল মাদারীপুরে একটি হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।
সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০২০ সালের ১৯ অক্টোবর কাওলায় দুবাই প্রবাসী রোমান মিয়া ও তার ফুফাতো ভাই মনির হোসেনকে ডিবি পরিচয়ে মাইক্রোবাসে তুলে নেওয়া হয়। পরে তাদের মারধর করে সঙ্গে থাকা পাঁচ হাজার মার্কিন ডলার, দুই হাজার দিরহাম, মুঠোফোন, লাগেজসহ মালামাল ডাকাতি করে তাদের পাশের জঙ্গলে ফেলে দেওয়া হয়।
ওই ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় দায়ের করা মামলার তদন্তের ধারাবাহিকতায় ছয় ডাকাতকে গ্রেফতার করে ডিবি। এদের মধ্যে হাসান রাজার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে আকসাদুদের নাম আসে।
গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর আকসাদুদের স্ত্রীর সঙ্গে এক ব্যক্তির ১ কোটি ২৮ লাখ ও ১৪ লাখ টাকা ঘুষ লেনদেনের অডিও ছড়িয়ে পড়ে। ওই দিন রাতেই রংপুরের মিঠাপুকুর থেকে আকসাদুদকে গ্রেফতার করে ডিবি।
ডাকাতির ওই ঘটনায় ডিবি পুলিশের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত বছরের ১৮ আগস্ট আকসাদুদকে সাময়িক বরখাস্ত করে সিআইডি। পরে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।
জানা গেছে, সাবেক এসআই আকসাদুদ ডাকাতির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছিলেন। তিনি ২০১৩ সালে ডিএমপিতে কর্মরত থাকাকালে মতিঝিল অঞ্চলের একজন সহকারী পুলিশ কমিশনারকে মাথায় অস্ত্র ঠেকান। এছাড়া কর্তব্যরত অবস্থায় আরেকবার শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেন তিনি। এসব অভিযোগে দুইবার বিভাগীয় শাস্তিও ভোগ করেন আকসাদুদ।