ঢাকা, শনিবার ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ২৮শে পৌষ ১৪৩১

সীমান্ত হাটে বিক্রেতা নিয়োগে অনিয়ম

শৌখিন মিয়া, রৌমারী ও চর রাজিবপুর প্রতিনিধি : | প্রকাশের সময় : শনিবার ২১ অক্টোবর ২০২৩ ১২:১০:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
কুড়িগ্রাম জেলার চর রাজিবপুরের ‘বালিয়ামারী-কালাইয়েরচর’ সীমান্ত হাটে নতুন করে বিক্রেতা নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন চর রাজীবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৮ অক্টোবর ১৩ কর্মকর্তাকে আইনি নোটিশ দিয়েছেন আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল বাতেন শেখ।
 
নোটিশ পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন– বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, সিনিয়র সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব (এফটিএ-১), উপসচিব, রংপুর বিভাগীয় কমিশনার, কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, রাজীবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, রাজীবপুর থানার ওসি, কুড়িগ্রাম কাস্টমস কর্মকর্তা, জামালপুর ব্যাটালিয়ন ৩৫ বিজিবির বালিয়ামারী বিওপি কমান্ডার ও রাজীবপুর ইউপি চেয়ারম্যান।
 
নোটিশে বলা হয়েছে, সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে বংলাদেশের ৭৫ মিটার ও ভারতের ৭৫ মিটার জায়গায় বালিয়ামারী-কালাইয়েরচর সীমান্ত হাট। উভয় দেশের ৫০ বিক্রেতার জন্য হাটে ৫০টি কক্ষ নির্মাণ করা হয়েছে। হাটে ভারতের ক্রেতা ৩৯১ জন ও বাংলাদেশের ৫৮৭ জন।
 
নোটিশে আরও বলা হয়েছে– ২০২০ সালের ৩ মার্চ সীমান্ত হাটে বিক্রেতা নিয়োগের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি দেন রাজীবপুরের ইউএনও। তাতে বলা হয়, লটারির মাধ্যমে আরও ২৫ জন বিক্রেতা নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে আবেদন করেন ১ হাজার ৫৭৯ জন। কিন্তু কত তারিখে সভা করা হয় ও কী প্রয়োজনে বিক্রেতা বৃদ্ধি করতে হবে, সেসব জানানো হয়নি বিজ্ঞপ্তিতে। করোনা মহামারির কারণে নিয়োগটি সম্পন্ন হয়নি। গত ১৬ মে ফের হাট ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী স্বাক্ষরিত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে বলা হয়, ফের ২৫ জন বিক্রেতা নিয়োগ দেওয়া হবে। এতে আবেদন করেন ৬০৭ জন। কিন্তু তিনিও বিক্রেতা নিয়োগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেননি এবং অজানা কারণে বিক্রেতা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় লটারির অপশনটি তুলে দেন। গত ৯ আগস্ট সীমান্ত হাটে বিক্রেতা ৭৫ জনে উন্নীত করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে চিঠি পাঠান কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুল আরীফ।
 
নোটিশের তথ্যমতে, ২০১১ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ওই সীমান্ত হাটে বাংলাদেশের বিক্রেতা সংখ্যা ২৫। যদিও হাট পরিচালনা পদ্ধতির বিধানে বিক্রেতা সংখ্যা ৫০ জনের কথা বলা হয়েছিল। তবে জনাকীর্ণ হাটের অনেকগুলো অসুবিধা রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ জন বা ৭৫ জন বিক্রেতার বসার জায়গা, ক্রেতাদের গণনা করে প্রবেশ ও বের করা, বিনা অনুমতিতে প্রবেশ বন্ধ করা, সীমান্ত হাটকে সিসিটিভি ক্যামেরার আওতায় আনা, ব্যাংকের শাখা স্থাপন করা। এসব নিশ্চিত করে যদি দেখা যায় বিক্রেতা ২৫ জন থেকে ৫০ জনে উন্নীত করা যায়, তাহলে ২০২০ সালের ৪ মার্চের গণবিজ্ঞপ্তি অনুসারে লটারির মাধ্যমে বিক্রেতা নির্বাচন করতে হবে। একই সঙ্গে ২০২৩ সালের ১৬ মের গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিক্রেতা বৃদ্ধির কার্যক্রম আগামী সাত দিনের মধ্যে বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় হাইকোর্টে রিট মামলা করা হবে। এ ক্ষেত্রে মামলা-মোকদ্দমার খরচ নোটিশ প্রাপকরা নিজ নিজ তহবিল থেকে বহন করতে বাধ্য থাকবেন।
 
আইনি নোটিশ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সাইদুল আরীফ। সীমান্ত হাটে অনিয়মের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘হাটে অনিয়ম হয়ে থাকলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’