পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, সরকার সব অংশীজনের সহযোগিতায় ২০৪০ সালের মধ্যে সীসামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার করেছে। সীসা এবং ভারী ধাতু দূষণকে নীরব সংকট হিসেবে উল্লেখ করেন তিনি।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাজধানীর বিআইসিসিতে অনুষ্ঠিত সীসামুক্ত বাংলাদেশ: আমরা কীভাবে পৌঁছাব? শীর্ষক জাতীয় কর্মশালায় এ কথা বলেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সীসা দূষণ প্রতিরোধ সপ্তাহ উপলক্ষে মন্ত্রণালয় এবং ইউনিসেফের উদ্যোগে আয়োজিত এ কর্মশালার উদ্দেশ্য ছিল ভারী ধাতু দূষণের স্বাস্থ্যগত প্রভাব, বিশেষত শিশুদের ওপর এর ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি এবং এই সংকট মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারদের একত্রিত করা।
সীসা দূষণের উৎস শনাক্ত ও নিয়ন্ত্রণে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে তিনি বলেন, সীসা দূষণের জাতীয় পর্যায়ের তথ্যসমূহ কার্যকর নীতিমালা তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ। ইউনিসেফ এবং বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সহযোগিতার প্রশংসা করেন এবং দূষণ প্রতিরোধে সমন্বিত, তথ্যভিত্তিক উদ্যোগের আহ্বান জানান।
এছাড়া দৈনন্দিন জীবনে সীসাযুক্ত ভারী ধাতুর ব্যবহার বন্ধ করতে কাজ করবে পরিবেশ মন্ত্রণালয় বলেও প্রতিশ্রুতি দেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
কর্মশালায় উপস্থাপিত বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায়, বাংলাদেশের শিশুদের রক্তে উদ্বেগজনক মাত্রায় সীসা রয়েছে এবং এর ঝুঁকি বায়ু, পানি, মাটি, খাদ্য এবং রং ও রান্নার পাত্রের মতো ভোক্তা সামগ্রী থেকে হতে পারে। দ্রুত নগরায়ন ও শিল্পায়নের ফলে ভারী ধাতুর দূষণ বেড়েছে, যা শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
সম্প্রতি ইউনিসেফের সহযোগিতায় আইইডিসিআর ও আইসিডিডিআরবি পরিচালিত এক গবেষণায় ঢাকা, খুলনা ও সিলেটসহ বিভিন্ন জেলায় শিশুদের রক্তে সীসার উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এই সংকটকে সামনে রেখে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, ইউনিসেফ ও ইউএসএআইডির সহযোগিতায় আসন্ন এমআইসিএস ২০২৪-২০২৫ জরিপে রক্তের সীসার মাত্রা অন্তর্ভুক্ত করেছে; যা নীতি প্রণয়নে সহায়ক তথ্য প্রদান করবে।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ।
এ সময় বক্তব্য দেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন; ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স; ইউএসএআইডির মিশন পরিচালক রিড আইশ্লিম্যান; বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান; এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. ফাহমিদা খানম।
বায়ান্ন/এমএমএল/একে