গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, গণহত্যার বিচার ও অপরধীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নানা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে গণঅধিকার পরিষদ।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সাধারণ সম্পাদক মো. রাশেদ খাঁন।
লিখিত বক্তব্যে রাশেদ খাঁন বলেন, গণঅধিকার পরিষদ শুরু থেকেই গণহত্যার বিচারে কঠোর প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি বিকেল সাড়ে ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, গণহত্যার বিচার ও গণহত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে ঢাকা মহানগর গণঅধিকার পরিষদ বিক্ষোভ সমাবেশ করবে। এছাড়া জনগণকে গণহত্যার বিচারে আরও বেশি সম্পৃক্ত করতে দেশব্যাপী আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত লিফলেট বিতরণ, গণসংযোগ এবং ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলায় জেলায় ৫ দফা দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করা হবে।
সরকারের অপারেশন ডেভিল হান্ট নিয়ে রাশেদ বলেন, গাজীপুরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা আক্রান্ত হওয়ার পরে অপারেশন ডেভিল হান্ট শুরু হয়েছে। কিন্তু আমরা এখনো সেনাবাহিনীর কাছে আশ্রয় নেওয়া ৬২৬ জনের অবস্থান সম্পর্কে জানি না। বড় বড় ডেভিলরা তো পালিয়ে গেছে। ওবায়দুল কাদের ৩ মাস নিরাপদে অবস্থান করার পরেও কেন তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি? আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড ও শেখ পরিবারের সদস্যরা কাদের সহায়তায় দেশ ছেড়েছে? অন্তর্র্বতীকালীন সরকার কি এসব তদন্তে কোন কমিটি গঠন করেছে? না করার রহস্য সম্পর্কে আমরা জানতে চাই। অপারেশন ডেভিল হান্টকে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু এর মাধ্যমে যেন আওয়ামী লীগের সাধারণ ও নিরীহ কোন কর্মী-সমর্থক হয়রানি না করা হয়। শুধুমাত্র অপরাধীরাই যেন অপারেশন ডেভিল হান্টের অন্তর্ভুক্ত হয়। অন্যথায় গণগ্রেপ্তার ও গণহয়রানি শুরু হলে সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এই সুযোগে মামলাবাজি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাও ঘটতে পারে।
পরে গণঅধিকার পরিষদ ৫ দফা তুলে ধরেন রাশেদ। দফাগুলো হলো-
১. জুলাই-আগস্টের বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিগত ১৬ বছরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আহত, ক্ষতিগ্রস্ত ও শহীদদের সঠিক তালিকা তৈরি, ক্ষতিপূরণ এবং যথাযথ চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।
২. জুলাই গণহত্যায় জড়িত বিদেশে পলাতক গণহত্যার মাস্টারমাউন্ড শেখ হাসিনাসহ সকলকে আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করা এবং বিচারিক প্রক্রিয়ায় গণহত্যার সাথে জড়িতদের রাজনীতি নিষিদ্ধের পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
৩. ফ্যাসিবাদের আমলে উন্নয়নের নামে লুটপাট, অর্থ পাচারে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করা।
৪. জন-আকাক্সক্ষার নতুন বাংলাদেশ বির্নিমাণে রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে কার্যকর সংস্কার নিশ্চিতে অভ্যুত্থানের অংশীজনদের নিয়ে উপদেষ্টা পরিষদ পুর্নগঠন ও নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা।
৫. বিগত ১৬ বছরে ফ্যাসিস্ট হাসিনার রেজিমে সংগঠিত গুম-খুন ও ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ভুয়া নির্বাচনের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে বিচার নিশ্চিত করা।
সংবাদ সম্মেলনে গণঅধিকার পরিষদের সহ-সভাপতি ও উচ্চতর পরিষদ সদস্য ফারুক হাসান, উচ্চতর পরিষদের সদস্য আবু হানিফ, হাবিবুর রহমান রিজু, সহ সভাপতি মাজেদুল ইসলাম, প্রচার সম্পাদক শহিদুল ইসলামসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
