শীতকালে অতিথি পাখিরা আশ্রয় নিয়েছে তুলসীগঙ্গা নদীর পূর্বপাড়ে মাহমুদপুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের আছরাঙ্গা দিঘীতে। পাখির কিচিরমিচির ডাকে মুখরিত তুলসীগঙ্গ নদীর তীরবর্তী এ সব এলাকা। জয়পুরহাট জেলার ক্ষেতলাল উপজেলায় প্রাচীন সভ্যতার ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন হচ্ছে আছরাঙ্গা দীঘি, যা উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের তুলসীগঙ্গা নদীর তীরে অবস্থিত। প্রায় ২৬ একর জায়গা জুড়ে বিস্তৃত আছরাঙ্গা দিঘীর দৈর্ঘ্য১০০০ ফুট এবং প্রস্থ ১০৭০ ফুট। ততকালীন রাজশাহী জেলার তাহিরপুরের জমিদার মৌন ভট্টের আমলেবৃষ্টিপাত কম হওয়ার ফলে কৃষি জমিগুলো চাষের উপযোগী হয় এর দীঘির পানিতে। তিনি নবম শতকের মাঝামাঝি ( আনুমানিক ৮১৭ খ্রীঃ) এই দীঘি খনন করেন।
প্রতিবছর শীতে দূর-দূরান্ত থেকে পরিযায়ী পাখিরা আশ্রয়ের খোঁজে আসে আমাদের দেশে। ভ্রমণ পিপাসু মানুষ পাখি দেখতে ভিড় করে আছরাঙ্গা দিঘীতে । পাখিদের কলকাকলি প্রকৃতির শোভা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণে। আবাসিক ও অতিথি পাখি মিলে দেশে প্রায় ৬৫০ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এর মধ্যে ৩৬০ প্রজাতির পাখি আবাসিক। বাকি ৩০০ প্রজাতি অতিথি পাখি। ‘শীত এলেই জলাশয়, নদীর তীরের নিরাপদ স্থান, বিভিন্ন হাওর, বিল ও পুকুরের পাড়ে চোখে পড়ে নানা রঙ-বেরঙের নাম জানা, অজানা পাখির। বেআইনিভাবে শিকার হচ্ছে এসব পাখি। অতিথি পাখি প্রকৃতির বন্ধু, আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের গর্ব ও প্রেরণা।
এ পাখিগুলোকে অচেনা পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বন্ধুসুলভ আচরণ করা দরকার। এই পাখিগুলো রক্ষা করা সকলের দায়িত্ব।’তাই জয়পুরহাট জেলার বিভিন্ন গাছে এই পাখিদের নিরাপদ বাসস্থান গড়ার লক্ষ্যে গাছে গাছে মাটির হাড়ি দিয়ে কৃত্তিম বাসা তৈরী করেছেন শান্তিসংঘ- কল্যানের পথে... নামে স্থানীয় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। শীতকালে বিভিন্ন অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত এই দিঘীর মনোমুগ্ধকর প্রাকৃতিক পরিবেশ নানা বয়সী দর্শনাথীদের আকর্ষণ করে।