ঢাকা, শুক্রবার ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

অবকাশকালীন ছুটির পর রোববার শুরু খুলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : শনিবার ৭ অক্টোবর ২০২৩ ১০:১২:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

প্রায় দেড় মাসের অবকাশকালীন ছুটি শেষে রোববার খুলছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট। আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের পদচারণায় আবার মুখরিত হবে আদালত অঙ্গন। খোলার পরপর বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক ও জনগুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি ও আদেশ হওয়ার কথা রয়েছে। এসব মামলা নিয়ে সরগরম থাকবে আদালতপাড়া। এ নিয়ে উত্তাপ ছড়িয়ে পড়তে পারে রাজনৈতিক অঙ্গনেও।

 

বহুল আলোচিত সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল শুনানি, গ্রেপ্তার ও রিমান্ড সংক্রান্ত ৫৪ ধারার রিভিউয়ের অধিকতর শুনানি, মেয়র তাপসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি, বিএনপির শীর্ষ ৭ আইনজীবী নেতার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগের শুনানি, সাজার বিরুদ্ধে আদিলুর-এলানের আপিল শুনানি, একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলার শুনানি, সাজার বিরুদ্ধে আমান উল্লাহ আমানের আপিল শুনানি, নওগাঁয় র‌্যাবের হেফাজতে নারী মৃত্যুর ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটির প্রতিবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে আগামী কিছুদিনের মধ্যে। এছাড়া বিভিন্ন আলোচিত ইস্যুতে রিট মামলার শুনানিও রয়েছে হাইকোর্টের কার্যতালিকায়।

 

ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ আবেদনের শুনানি

বহুল আলোচিত বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। বিষয়টি আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় অসংখ্য দিন এসেছে কিন্তু শুনানি হয়নি। যেকোনো সময় এই রিভিউ আবেদনের শুনানি হবে বলে জানা গেছে।

 

২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা সংসদ সদস্যদের হাতে এনে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করে দেওয়া আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন দাখিল করা হয়।

আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় রাষ্ট্রপক্ষ থেকে ৯০৮ পৃষ্ঠার এ রিভিউ আবেদনে ষোড়শ সংশোধনীর পক্ষে ৯৪টি যুক্তি দেখিয়ে আপিল বিভাগের রায় বাতিল চাওয়া হয়েছে।

 

২০১৭ সালের ৩ জুলাই তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেন।

 

বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার ও রিমান্ড সংক্রান্ত রিভিউ শুনানি

 

বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনার বিষয়ে আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগে বিচারাধীন রয়েছে। আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষের রিভিউ আবেদনের অধিকতর শুনানি হবে।

 

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিনা পরোয়ানায় গ্রেপ্তার সংক্রান্ত ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা ও রিমান্ড সংক্রান্ত ১৬৭ ধারা সংশোধনের নির্দেশনার বিষয়ে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।

 

জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল মামলা

দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া জামায়াতের সব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে করা আবেদনটিও আপিল বিভাগে শুনানির জন্য রয়েছে।

 

গত ৩১ জানুয়ারি দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীকে দেওয়া নির্বাচন নিবন্ধন অবৈধ বলে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের সারসংক্ষেপ জমা দিতে নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্টের জারি করা রুলের চূড়ান্ত রায়ে জামায়াতকে দেওয়া নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধন ২০১৩ সালের ১ আগস্ট অবৈধ বলে রায় দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল-হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর (লার্জার) বেঞ্চ। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে জামায়াত।

 

জামায়াতের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন

 

রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধন অবৈধ ঘোষিত বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় রয়েছে।

 

এ আবেদনের সঙ্গে জামায়াতের আমির, সেক্রেটারি জেনারেলসহ সংগঠনটির কেন্দ্রীয় নেতাদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানিও হবে জানিয়েছেন আইনজীবী তানিয়া আমীর।

 

সম্প্রতি তরীকত ফেডারেশনের মহাসচিব সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ কয়েকজন (রিটকারী) আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় পৃথক দুটি আবেদন করেন। পরে গত ২৬ জুন আবেদনগুলো আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে উপস্থাপন করা হয়। সেদিন চেম্বার আদালত আবেদন দুটি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠিয়ে দেন। এর মধ্যে ৪২ ব্যক্তি আবেদন দুটিতে পক্ষভুক্ত হতে আবেদন করেন। এই ৪২ ব্যক্তির মধ্যে আছেন– শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সদস্য, বীর মুক্তিযোদ্ধা, লেখক, শিক্ষাবিদ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব, অধিকার কর্মী ও আইনজীবী।