কোন ভাবেই যেন থামছে না বান্দরবানের সাঙ্গু রিজার্ভের বিলুপ্ত মূল্যবান কাঠ পাচার। সংঘবদ্ধ পাচারকারীদের কারণে আজও হুমকিতে এখন এ বন। সংঘবদ্ধ ব্যবসায়ী চক্রটি প্রভাবশালী হওয়ার কারণে বান্দরবানের দুই বন বিভাগও নিরব ভূমিকা পালন করছে। সাঙ্গু রিজার্ভে আশপাশে হওয়ায় বান্দরবানের থানছি , সেকদু রেঞ্জ ও পাল্পউডের মিবাক্ষ্যা, রেমাক্রী রেঞ্জ হতে সব ধরণের জোত পারমিট ইস্যু, গাছ কর্তন পূর্বক আহরণ এবং পরিবহন নিষিন্ধ করে ২০২০সালের ২৯ডিসেম্বরে পত্রাদেশ দেন প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসেন চৌধুরী। তিনি বর্তমানে একই পদে কর্মরত থাকলেও তাঁর চিঠির নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে মানছেন না বান্দরবান ও পাল্পউড বন বিভাগ। ২০২০সালে কর্তন নিষিদ্ধ হলে বান্দরবান শহরের প্রতিটি ডিপোতে (কাঠ মজুদের পয়েন্ট) সয়লাব সরকারি সাঙ্গু সংরক্ষিত বনের নিষিদ্ধ গাছে দাপাট রদ্দায়। বর্তমানে বান্দরবান শহরে কাঠ মজুদের স্থান নিউগুলশান ডিপো, জেরী বাবুর ডিপো, উজানি পাড়া ডিপো, মাখসুদ কোম্পানীর ডিপো এবং শহীদ মাষ্টারের ডিপোতে এসব বিলুপ্ত প্রজাতির গর্জন, গোদা, গুটিয়া গামার ও চাপালিশ গাছের দাপাট রদ্দার বিশাল মজুদ রয়েছে। যার আনুমানিক পরিমান ২০হাজার ঘনফুটের চেয়েও বেশি।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম কোষ্টগার্ডের একটি টহল দল নতুনব্রীজ টোল পয়েন্ট হতে ঢাকাগামী গাছসহ একটা ট্রাক (পিরোজপুর ট ১১-০১৯৯) আটক করে। আটককৃত ট্রাকে বোঝাইকৃত কাঠের মালিক কাঠ ব্যবসায়ী ও আওয়ামী লীগ নেতা সালাউদ্দিন।
এদিকে সরকারি বনের নিষিদ্ধ প্রজাতির কাঠ পাচারের গোপন সংবাদে চট্টগ্রাম কোষ্টগার্ড কাঠ বোঝাই গাড়িটি আটকের পরে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের কাছে হস্তনান্তর করেন। বিষয়টি নিশ্চত করেন পাল্পউডের বিভাগের বন কর্তকর্তা তহিদুল ইসলাম।
জোতের কাঠের আড়ালে সরকারি বনের কাঠ নিয়মিত পাচার করলেও জড়িত ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগের নেতা সালাউদ্দীনের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগ।
এবিষয়ে সালা উদ্দিন দৈনিক সাঙ্গুকে বলেন আটক কাঠগুলো জোতের । ভুল তথ্যের ভিত্তিকে কোস্টগার্ড কাঠগুলো আটক করেছে। আমি রির্জাভের কোন কাঠ পাচারের সাথে জড়িত নয়।
প্রায় বিলুপ্ত এসব গাছের জোত পারমিট বন্ধের প্রায় ৩বছর পরও সরকারি বনের মূল্যবান কাঠ পাচার বন্ধ না হওয়ায় উদ্বিগ্ন বান্দরবানের পরিবেশবাদীরা। বিলুপ্ত গোদা গাছ, গর্জন, গুটিয়া ও চাপালিশ প্রজাতিসহ সবধরণের গাছ পাচার রোধ ও অভিযান পরিচালনা করে শহরের ডিপোতে মজুদ কর্তন নিষিদ্ধ কাঠের রদ্দা উদ্ধারে সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করার দাবি এলাকাবাসীর।
কাঠের গাড়িতে ইয়াবা পাচারকালে ২০১৯সালে তার বড় ভাই গিয়াসউদ্দীনকেও গ্রেফতার করেছিল র্যাব। আটকের পর কাঠের গাড়ির ড্রাইভার ও তারভাইকে দাউদকান্দি থানায় হস্তনান্তর করেছিল র্যাব। উচ্চ আদালত থেকে তার ভাইয়ের জামিন দিলেও যে মামলা কুমিল্লা কোর্টে এখনো চলমান। এবিষয়ে বান্দরবান পাল্পউড বিভাগের বন কর্মকর্তা মোঃ তহিদুল ইসলাম
জানান আমি বাইরে ছিলাম। কাঠ পাচারের বিষটি খোঁজ নিচ্ছি। অবৈধ কিছু থাকলে ব্যবস্থা নেবো। চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের বন কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান আমি ঢাকায় বিষয়টি নিয়ে খোঁজ খবর নিচ্ছি।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বিপুল কৃষ্ণ দাশ বলেন, কোনভাবে রির্জাভ ফরেস্ট থেকে কাঠ পাচার হতে দেবো না। মঙ্গলবার একটি ট্রাক আটক করা হয়েছে। অবৈধ কিছু আছে কিনা আমরা পরিক্ষা করছি।