ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

আজ শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : | প্রকাশের সময় : বুধবার ১ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ ১০:২০:০০ পূর্বাহ্ন | জাতীয়

ঢাকা: বুধবার (১ ফেব্রুয়ারি) শুরু হচ্ছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৩। গত দুই বছরের তুলনায় এবারের বইমেলা অনেকটাই ভিন্ন।

 

করোনা মহামারির জন্য গত দুই বছর মেলা নির্দিষ্ট সময়ে হতে পারেনি। এ বছর মাসজুড়ে চলবে মেলা। এ বছর আঙ্গিক ও বিন্যাসেও পরিবর্তন এসেছে, বেড়েছে নতুন প্রকাশক এবং স্টলের সংখ্যা।

 

এবার বইমেলার আয়তন হচ্ছে সাড়ে ১১ লাখ বর্গফুট৷ এবার বইমেলায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি স্টল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৩৮টি প্যাভিলিয়ন থাকবে। লিটলম্যাগ চত্বরে ঠাঁই পাবে ১৫৩টি স্টল।

বাংলা একাডেমি এবার ৭টি নতুন বই মেলার প্রথম দিনেই প্রকাশ করবে, যেগুলোর মোড়ক উন্মোচন করবেন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বিকেল ৩টায় বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে বইমেলার উদ্বোধন করবেন তিনি। সেদিন বাংলা একাডেমি ঘোষিত সাহিত্য পুরস্কারও দেওয়া হবে।

এবার বইমেলায় নতুন পুরোনো মিলিয়ে ১৩৬টি বই প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি। তার মধ্যে বইমেলার প্রথম দিনে 'শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলী', 'অসমাপ্ত আত্মজীবনী- পাঠ বিশ্লেষণ', 'আমার দেখা নয়াচীন-পাঠ বিশ্লেষণ', 'কারাগারের রোজনামচা-পাঠ বিশ্লেষণ', হাসান আজিজুল হকের 'সাবিত্রী উপাখ্যান' এর ইংরেজি অনুবাদ 'দ্য লেটার অব সাবিত্রী'-র মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

এছাড়া বাংলা একাডেমি থেকে এবার রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনী 'আমার জীবন, আমার রাজনীতি' প্রকাশিত হবে, যার মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী৷ বাংলা একাডেমি বিভিন্ন জেলায় যে মেলাগুলোর আয়োজন করেছে গত বছর সেসব সংকলন সাত খণ্ডে প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি। প্রথম খণ্ডটির মোড়ক উন্মোচন হবে বইমেলার উদ্বোধনী মঞ্চে।

ছুটির দিন ছাড়া মেলা প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। তবে দর্শক, ক্রেতা, পাঠকদের রাত সাড়ে ৮টার পর মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। ছুটির দিনে বইমেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চলবে। একুশে ফেব্রুয়ারি মেলার দুয়ার খুলবে সকাল ৮টায়।

বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক নূরুল হুদা বলেন, হয়ত আগামীতে সোহরাওয়ার্দীতে আমরা বইমেলা আয়োজন করতে পারব না। তখন অন্য জায়গা খুঁজতে হবে।
 
বইমেলা চলাকালীন মেট্রোরেলের কাজ চলমান থাকায় এবার বইমেলায় প্রবেশের গেটের সংখ্যা কমানো হয়েছে। টিএসসি গেট, রমনা কালীমন্দির ও দোয়েল চত্বরে তিনটি প্রবেশপথ রাখা হয়েছে। পরমাণু শক্তি কমিশনের সামনে এবার কোনো প্রবেশ গেট নির্মাণ করা হবে না। বইমেলায় আগত দর্শক-পাঠক ও ক্রেতাদের দোয়েল চত্বর হয়ে প্রবেশ করতে বিশেষভাবে অনুরোধ জানিয়েছেন বাংলা একাডেমির কর্মকর্তারা।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মহাপরিচালক মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বইমেলায় পাইরেসি বড় ইস্যু। অনেক সময় দেখা যায়, একই বিষয় নিয়ে ১০-১২টা বই মেলায় চলে আসে। বিশেষ করে অনূদিত বইগুলোর বিষয়ে লেখক-প্রকাশকরা তো মূল প্রকাশক বা লেখকের অনুমতি নেন না। এসব বিষয়ে টাস্কফোর্স কাজ করছে। তবে বলতে হয়, ভালো লেখা, নির্ভুল সম্পাদনার বই এখনও কম।  এদিকে লেখক, প্রকাশকের আরও সহযোগিতা প্রয়োজন।

মুহম্মদ নূরুল হুদা বলেন, বড় প্রকাশনীগুলো মেলার তথ্যকেন্দ্রে তাদের সবগুলো নতুন বইয়ের কপি জমা দিতে চান না। তথ্যকেন্দ্রের বইগুলো বিশ্লেষণ করে আমরা বইমেলার মানসম্মত বইয়ের সংখ্যাটি মেলা শেষে জানাই। মানসম্মত বইয়ের সংখ্যা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। সেই নিয়ে দায় প্রকাশকদের। তারা সহযোগিতা করলে, সুসম্পাদিত বইগুলো তথ্যকেন্দ্রে জমা দিলে নিশ্চয়ই সেই মানসম্মত বইয়ের সংখ্যা বাড়বে।

মেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম জানান, বইমেলার বিশেষ টাস্কফোর্স ১৯টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনেছে। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ তাদের সতর্ক করেছে।

বাংলা একাডেমি জানিয়েছে, বাংলা একাডেমির ৩টি প্যাভিলিয়ন ও শিশু কিশোর উপযোগী প্রকাশনার বিপণনের জন্য ১টি স্টল থাকবে।

অমর একুশে বইমেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ২০২২ সালে প্রকাশিত গ্রন্থের মধ্য থেকে গুণগত মাম বিচারে সেরা প্রকাশককে 'চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার', শৈল্পিক বিচারে সেরা বই প্রকাশের জন্য ৩টি প্রতিষ্ঠানকে 'মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার', শিশুতোষ গ্রন্থের জন্য ১টি প্রতিষ্ঠানকে 'রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার' দেওয়া হবে। পাশাপাশি এ বছরের মেলায় অংশ নেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে স্টলের নান্দনিক সাজসজ্জায় শ্রেষ্ঠ বিবেচিত প্রতিষ্ঠানকে 'কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার' দেওয়া হবে৷ এ পুরস্কারগুলো বইমেলার শেষ দিন প্রদান করা হবে।