অন্ধজন আঁধারে হাঁটে
- আনোয়ার হক
সদর দরজা বিহীন এক উঠোন
চাঁদের মৃদু আলোর বিপরীতে
বৃক্ষরাজির দোদুল্যমান ছায়া
অর্ধ চন্দ্র উপভোগের রাতে
কবিতা লেখার ইচ্ছা জাগে।
উঠোনের মাঝে পাটির শয্যায়
আলস্যে এলিয়ে থাকা শরীর
মোটেই সায় দেয় না যে তাতে
ইচ্ছা বনাম আলস্যের লড়াইয়ে
আলস্য পরাজয় মানে অবশেষে।
তারপর বাঁশ-বেত-ছনের ঘরে
হ্যারিকেনের আলোমাখা টেবিলে
ডায়েরির পাতায় কলমের নীব
আঁচড় কাটে ছন্দে তালে লয়ে
সময় যে অল্পই বাকী ভোর হতে
যেতে তো হবেই শেষ পঙক্তিতে।
ক্লান্ত এক মানুষের কন্ঠ
বাড়িতে কেউ আছেন কি?
একটু পানি দিবেন আমায়?
বহুদূর হতে হেঁটে এসেছি
প্রচন্ড তৃষ্ণায় কাতর আমি।
ভাত খাবেন যা আছে তাই দিয়ে?
একা মানুষের ঘরে আহামরি কিছু
আয়োজন হয় না, জানেন নিশ্চয়।
খেতে পারি যদি থালা, মগ
ধোয়া মোছা পরিচ্ছন্ন হয়
অন্ধ পথিক দ্বিধাগ্রস্ত নয়।
রোজ আসে দূরের স্টেশন থেকে
একই সময়ে বাড়ি ফেরার পথে
ভাত খেয়ে যায় যেটুকুন থাকে।
দেখতে যে পায় না তবুও
অন্ধকারে হাঁটে প্রতি রাতে
একটা আলো জ্বেলে রাখি
দরকার নাই জানার পরেও।