মোবাইল ফোনে কথা বলার ‘অপরাধে’ মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়ায় এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটুনি দিয়েছেন মাদ্রাসার দুই শিক্ষক। এ ঘটনায় মারধরের শিকার শিক্ষার্থী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ তদন্তে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
উপজেলার জয়চণ্ডী ইউনিয়নের আলমপুর হাফিজিয়া মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের প্রধান শিক্ষক বুরহান উদ্দিন ও সহকারী শিক্ষক বাবুল হোসেনের বিরুদ্ধে মারধরের এই অভিযোগ ওঠেছে। অভিযোগকারী ওই মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আহমদ নিহাদ। এর আগেও ওই মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীকে অমানবিকভাবে মারধর করে হাসপাতালে পাঠানোর অভিযোগ রয়েছে।
লিখিত অভিযোগে ইয়াছিন আহমদ নিহাদ উল্লেখ করেন, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি মোবাইলের সাউন্ড কমিয়ে ইসলামী গজল শুনছিলেন। এসময় মাদ্রাসার শিক্ষক বুরহান উদ্দিন ও বাবুল হোসেন এসে তার হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর শুরু করেন।
ইয়াছিন আহমদ আরও জানান, মাটিতে ফেলে সহকারী শিক্ষক বাবুল হোসেন তার গলা ও বুকে পা দিয়ে চেপে ধরেন। আর প্রধান শিক্ষক (প্রধান হুজুর) বুরহান উদ্দিন বেত দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন। মারধরের একপর্যায়ে ইয়াছিন জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। জ্ঞান ফিরলে তার বাবা এসে তাকে মাদ্রাসা থেকে নিয়ে যান। স্থানীয় চিকিৎসক দেখিয়ে তাকে বাসায় নিয়ে যান তার বাবা। পরদিন অবস্থার অবনতি হলে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি হন ইয়াছিন।
অভিযোগে ইয়াছিন আহমদ উল্লেখ করেন, মাদ্রাসায় প্রায়ই এই দুই শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মারধর করেন। কিন্তু বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ভয়ে মুখ খুলেন না।
নির্যাতন প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক বুরহান উদ্দিন বলেন, ‘হলে মোবাইল ফোন ব্যবহার করায় ইয়াছিনকে শাসানো হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু হয়নি।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, এর আগেও ওই মাদ্রাসার শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ছাত্র নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে। গত বছরের অক্টোবরেও নাহিদ নামের এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেন শিক্ষকরা। ওই শিক্ষার্থী পরে কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন।