কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে ইউপি নির্বাচনের দিন নির্বাচনী সহিংসতায় গুলিবিদ্ধ যুবলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন মারা গেছেন। আজ মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
নিহত দেলোয়ার হোসেন (৩৮)। গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউনিয়নের গোবরিয়া নামাকান্দা গ্রামের বাসিন্দা ইব্রাহিম মিয়ার ছেলে। নিহত দেলোয়ার হোসেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলামের সমর্থক ছিল।
গত রোববার দুপুরে দক্ষিণ গোবরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থী মোহাম্মদ এনামুল হক ও সাইফুল ইসলামের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় পুলিশের ছোড়া গুলিতে দেলোয়ার গুলিবিদ্ধ হন।
বেলা একটার দিকে কেন্দ্র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দক্ষিণ গোবরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়ায়। এসময় গ্রামের আনোয়ার হোসেন, মো. রানা ও সাব্বির মিয়াসহ চারজন গুলিবিদ্ধ হন।
দেলোয়ারের বাবা ইব্রাহিম মিয়া বলেন, ভোটের দিন আমার ছেলের মাথা ও শরীরে গুলি লেগেছিল। প্রথমে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় নিতে যাওয়ার জন্য চিকিৎসকেরা পরামর্শ দেন। এছাাও আইসিইউ লাগবে বলেও জানাম তারা। পরে দ্রুত ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গিয়ে ছিলাম। এত কিছু করেও ছেলেকে বাঁচাতে পারলাম না।
এদিকে বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল ইসলামের ভাষ্য, ভোটের দিন শুরু থেকে পুলিশ নৌকার প্রার্থীর পক্ষে অবস্থান নেয়। যেখানেই নৌকার সমর্থকেরা কেন্দ্র দখল করতে গেছে সেখানেই পুলিশ সহযোগিতা করেছে। আর তাঁর সমর্থকদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে।
সংঘর্ষের বর্ণনা দিয়ে তিনি আরও জানান, ওই দিন বেলা একটার দিকে দক্ষিণ গোবরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণ নেয় নৌকা প্রার্থীর সমর্থকেরা। এরপর পুলিশ সব ভোটারদের বের করে দিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। তখন তাঁর সমর্থকেরা মনে করেছিলেন দরজা বন্ধ করে নৌকায় সিল মারার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এ সময় তাঁর সমর্থকেরা প্রতিরোধ করতে গেলে নৌকার সমর্থকেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান, একই সঙ্গে পুলিশও গুলি ছোড়ে।
অভিযোগ অস্বীকার করে নৌকার প্রার্থী ও সদ্য নির্বাচিত গোবরিয়া আব্দুল্লাহপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, দক্ষিণ গোবরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার কোনো সমর্থক কারোর ওপর হামলা চালাননি। সাইফুলের লোকজনই কেন্দ্র দখল করতে গেলে পুলিশ গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কুলিয়ারচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ গোলাম মস্তুফা গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, আহত দেলোয়ার মারা গেছেন তিনিও শুনেছেন। তবে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছেন কি না। কিংবা কার ছোড়া গুলিতে মারা গেছেন। এ বিষয়ে তিনি কিছু বলতে পারছেন না।
