ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১

ক্ষেতলালে যৌতুকের বলি হলেন ফরিদা: আটক-২

ষ্টাফ রিপোর্টার জয়পুরহাট : | প্রকাশের সময় : সোমবার ২৯ নভেম্বর ২০২১ ০৪:০৯:০০ অপরাহ্ন | গণমাধ্যম
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে যৌতুকের বলি হলেন ফরিদা খাতুন (২৫) নামের এক গৃহবধু। তাকে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে তার স্বামী শ্বশুর ও শাশুরীর বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার ভোর ৪টায় পৌর এলাকার বুড়াইল গ্রামের আঃ গফুরের ছেলে সোহেল রানা (২৮), তার বাবা আঃ গফুর (৫০), মা হাজেরা ওরফে শিরিনা (৪৫) মিলে নিজ বাড়ীতে এ ঘটনা ঘটায়। শ্বশুর আঃ গফুর ও শ্বাশুরী হাজেরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
 
এলাকাবাসীর দাবী ফরিদাকে পরিকল্পিত হত্যা করেছে। পুলিশের দাবী আত্মহত্যার প্ররোচনা করেছে তার পরিবারের লোকজন। 
সরেজমিনে জানা গেছে, গত সাত বছর আগে একই গ্রামের মোফাজ্জল মন্ডলের মেয়ে ফরিদা খাতুনকে প্রতিবেশি আঃ গফুরের ছেলে সোহেল রানার সঙ্গে বিয়ে দেয়। সোহেল স্থানী একটি কোল্ডস্টোরেজে কাজ করে। তাদের কোল জুরে আসে একটি কন্যা সন্তান ছালেহা (২)। বাবার বাড়ী থেকে যৌতুক হিসেবে দিয়েছে এক খন্ড জমি, নির্মান করে দিয়েছে ইটের পাকা বাড়ী। তাতে ও আসা পুরন হয়নি স্বামী শ্বশুর শ্বাশুরি হাজেরা ওরফে শিরিনার। প্রায়ই বিভিন্ন অজুহাতে তার উপর চলত শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন।
ওই গৃহবধুকে হত্যার পর শনিবার ভোর ৪টায় তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন চিৎকার দিয়ে বলেন, ফরিদা গলায় ফাঁস দিয়ে  আত্মহত্যা করেছে। প্রতিবেশিরা তাদের চিৎকার শুনে বাড়ীর ভিতরে গিয়ে দেখতে পায়  ওই গৃহবধুকে মৃত অবস্থায় ঘরের ভিতর খাটের উপর শুয়ে লেপ দিয়ে ঢেকে রেখেছে। এ নিয়ে এলাকায় গুণঞ্জন শুরু হলে গৃহবধুর স্বামী সোহেল পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি ক্ষেতলাল থানায় জানালে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে ওই গৃহবধুর লাশ উদ্ধার করে  ময়না তদন্তের জন্য জেলা হাসপাতালে পাঠায়। এবং ঘটনা স্থল থেকে তার শ্বশুর আঃ গফুর ও শ্বাশুরী হাজেরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ বিষয়ে ওই গৃহবধুর বাবা মোফাজ্জল মন্ডল বাদী হয়ে ক্ষেতলাল থানায় পেনাল কোর্ড ৩০৬/৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
 
ওই গৃহবধু নির্যানত সহ্য করতে না পেরে তার পরিবারের ঘটনা শনিবার বিকেলে তার প্রতিবেশি এক ভাবিকে বলেন, আমার বাবা বাড়ী করার জন্য যে জায়গা টুকু আমার নামে দলিল করে দিয়েছে সেই জমি আমার শ্বশুর শ্বাশুরী স্বামীর নামে লিখে দিতে বলে। আমি না দিতে চাইলেও তারা আমার উপর বিভিন্ন সময় নির্যাতন করে। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাদের কে ওই বাড়ীর জমি দলিল করে দিয়ে দু’চোখ যে দিকে যায় সে দিকে চলে যাব। এরই মধ্যে কাল রাতে তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন তাকে হত্যা করেছে।
 
এ বিষয়ে ক্ষেতলাল থানার ওসি নিরেন্দ্রনাথ মন্ডল বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে, ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসা বাদের জন্য তার শ্বশুর শ্বাশুরী আটক করে থানায় আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসা বাদের পর জানা যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। স্বামী পলাতক রয়েছে তাকে ধরার জন্য চেষ্টা চলছে।