গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ৫৭টি কেন্দ্রকে তিনভাগে পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচনের কমিশনের ১৫ জন কর্মকর্তা। এ লক্ষ্যে গাজীপুর সিটিতে ১৫ জন কর্মকর্তাকে নির্বাচনী পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি।
বুধবার (২৪ মে) নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ অধিশাখার উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে পর্যবেক্ষকদের নিয়োগ করা হয়।
ইসি জানায়, আগামী ২৫ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণভাবে উল্লিখিত নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে এবং প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের নির্বাচনের পরিস্থিতি নিবিড় ও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যবেক্ষণের জন্য ১৫ জন কর্মকর্তাকে নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে।
যেসব বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন পর্যবেক্ষকরা-
ক. নিয়োগপ্রাপ্তগণ ২৪ মে'র মধ্যে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নিকট রিপোর্ট করবেন।
খ. রিটার্নিং অফিসার উক্ত দিনেই নিয়োগকৃত পর্যবেক্ষকদের মধ্যে পর্যবেক্ষণ এলাকা বণ্টন করবেন এবং এর একটি তালিকা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবেন।
গ. নিয়োগকৃত পর্যবেক্ষকরা এ সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নির্দেশনা অনুসারে দায়িত্ব পালন করবেন।
ঘ. পর্যবেক্ষকরা দায়িত্ব প্রদানকৃত এলাকায় অবস্থান করে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবেন।
ঙ. পর্যবেক্ষণকালে আইন ও বিধি অনুসারে কোনরূপ অনিয়ম বা ত্রুটিবিচ্যুতি (যেমন- আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ভোটারদের কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা প্রদান, জাল ভোট, অবৈধ প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টা ইত্যাদি) নজরে আসা মাত্র টেলিফোন বা মোবাইলের মাধ্যমে এবং প্রয়োজনে লিখিতভাবে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব অথবা অতিরিক্ত সচিব এবং সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে তাৎক্ষণিকভাবে অবহিত করবেন।
চ. পর্যবেক্ষণ সমাপ্ত হলে সংযুক্ত ছকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যৌথভাবে প্রতিবেদন দাখিল করবেন এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটলে তা অতিরিক্ত কাগজে লিপিবদ্ধপূর্বক সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় বরাবর দাখিল করবেন।
ছ. ২৪ মে (বুধবার) সন্ধ্যা ৬টায় অতিরিক্ত সচিবের সভাপতিত্বে আয়োজিত সভায় সকল পর্যবেক্ষকগণ উপস্থিত থাকবেন।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে আট জন, সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৭৯জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৪৬জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। মেয়র পদের প্রার্থীরা হলেন- মাছ প্রতীকে গণফ্রন্টের আতিকুল ইসলাম, নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট মো. আজমত উল্লা খান, লাঙ্গল প্রতীকে জাতীয় পার্টির এমএম নিয়াজ উদ্দিন, হাতপাখা প্রতীকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের গাজী আতাউর রহমান, গোলাপ ফুল প্রতীকে জাকের পার্টির মো. রাজু আহাম্মেদ।
এছাড়া স্বতন্ত্র থেকে মেয়র পদে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে জায়েদা খাতুন (সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা), ঘোড়া প্রতীকে মো. হারুন-অর-রশীদ ও হাতি প্রতীকে সরকার শাহনূর ইসলাম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
আগামী বৃহস্পতিবার (২৫মে) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৮ হাজার ১০০টি ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে এই নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাবেন। এদের মধ্যে পাঁচ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন পুরুষ ও পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন নারী এবং ১৮ জন হিজড়া ভোটার রয়েছে।
প্রতিটি ভোটকক্ষে সিসি ক্যামেরার (মোট চার হাজার ৪৩৫টি) মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে নির্বাচন কমিশন। এক্ষেত্রে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে বিশাল স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি দেখবেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ অন্য নির্বাচন কমিশনার, ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সাংবাদিকরা।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, সিসি ক্যামেরায় কোনো অনিয়ম দেখতে পেলে গাইবান্ধা নির্বাচনের চেয়েও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সর্বশেষ ভোট হয়েছে ২০১৮ সালের ২৬ জুন। নির্বাচিত করপোরেশনের প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২০১৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের সময় গণনা শুরু হয় গত ১১ মার্চ। বর্তমানে যারা নির্বাচিত রয়েছেন তাদের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর।