ঢাকা, শনিবার ১৮ মে ২০২৪, ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে মাদরাসায় অনুপস্থিত থাকে সুপার

জামালপুর প্রতিনিধি॥ | প্রকাশের সময় : শনিবার ১১ মার্চ ২০২৩ ১০:৪৬:০০ অপরাহ্ন | দেশের খবর
 
 
জামালপুরের বকশীগঞ্জে আয়া পদে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে এক বিধবা নারীর কাছ থেকে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মৌলভী পাড়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবদুস সাত্তার,সভাপতি আবদুল হামিদ ও সদস্য ফরহাদুজ্জামান ফোটা। টাকা ফেরত দেওয়ার ভয়ে মাদ্রাসায় যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন সুপার আবদুস সাত্তার। 
ভুক্তভোগী নারীর মা নুরুন্নাহার জানান, ২০২২ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নিরাপত্তাকর্মী ও আয়া পদে নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। মাদ্রাসার সুপার আবদুস সাত্তার ও সভাপতি আবদুল হামিদের পরামর্শে আমার বিধবা কন্যা সুফিয়া আক্তারকে আয়া পদে আবেদন করে। আবেদনের পর তারা আমার মেয়েকে চাকরী দিবে বলে ৬ লাখ টাকা দাবি করে। আমি তাদের কথায় এবং কন্যার সুখের জন্য তাদের দাবিকৃত টাকা দিতে রাজি হই। পরবর্তীতে অনেক কষ্টে ধারদেনা করে মাদরাসার সভাপতি আবদুল হামিদ,সুপার আবদুস সাত্তার ও অভিভাবক সদস্য পৌর কাউন্সিলর ফরহাদুজ্জামান ফোটার হাতে ৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা দেই। বাকি ৭৫ হাজার টাকা নিয়োগ পরীক্ষা শেষে দেওয়ার কথা জানাই। পরবর্তীতে জানতে পারি একই পদের জন্য আরেকজন প্রার্থীর কাছে সভাপতি,সুপার ও সদস্য ফরহাদুজ্জামান ফোটা মিলে ৬ লাখ টাকা নিয়েছেন। বিষয়টি আমি সভাপতি ও সুপারকে জানাই। তারা আমাকে আশ্বস্থ করেন তোমার মেয়ের চাকুরি হবে।  
 
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের প্রায় ৬ মাস পর গত ২৫ ফেব্রুয়ারি মাদ্রাসায় নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করেন সুপার আবদুস সাত্তার। মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা,আবেদনকারী ও ডিজি প্রতিনিধি মাদরাসায় উপস্থিত হলে স্থানীয় এলাকাবাসী নিয়োগ বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ করেন। সুপার,সভাপতি ও পৌর কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে ঝাড়– মিছিলও করেন তারা। এক পর্যায়ে তাদেরকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ফলে নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত হয়ে যায়। এখন আমি তাদের কাছে টাকা ফেরত চাইলে নানা তালবাহানা করে আসছে। আমার টাকা ফেরত না দিয়ে উল্টো আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে সুপার। 
 
তারা আমার মেয়েকে চাকুরি দিবে না আবার টাকাও ফেরত দিবেনা।  টাকার জন্য প্রতিদিন আসি আর যাই কারো দেখা পাইনা। 
 
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সুপার আবদুস সাত্তার বলেন,অফিসিয়াল কাজে অনেক সময় বাইরে থাকতে হয়। তাই হাজিরা দিয়েই চলে আসতে হয়। টাকা দেওয়ার ভয়ে অফিসে যাইনা কথাটা ঠিক না। 
 
এ ব্যাপারে মাদ্রাসার সভাপতি আবদুল হামিদ বলেন,ফোনেতো আর সব কথা বলা যায়না,স্বাক্ষাতে বলবোনি বলেই লাইন কেটে দেন তিনি। পরে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। 
 
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সরোয়ার আলম বলেন,নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে। সমঝোতার চেষ্টা চলছে। সুপার ছুটি না নিয়ে মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। 
 
এ ব্যাপারে বকশীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন নাহার বলেন,আমি সদ্য এ উপজেলায় যোগদান করেছি। বিষয়টি আমি অবগত নই। বিস্তারিত জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।