আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতির পূর্বাভাস দিয়েছে। আইএমএফের সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ অনুযায়ী, এ বছর বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি কমে ৪.৫ শতাংশে দাঁড়াবে। এটি দেশের জন্য বড় একটি ধাক্কা, কারণ জাতীয় বাজেটে এই প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ৬.৭৫ শতাংশ। এদিকে, সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ৯.৭ শতাংশে পৌঁছানোর সম্ভাবনা রয়েছে, যা অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগজনক।
এ প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে বিশ্বের অন্যান্য দেশের অর্থনীতির ক্ষেত্রেও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। প্রতিবছর আইএমএফ এপ্রিলে ও অক্টোবরে ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক আউটলুক’ প্রকাশ করে। তবে এই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের নিম্ন প্রবৃদ্ধি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির নির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করা হয়নি।
অন্যদিকে, ওয়াশিংটনে শুরু হওয়া বিশ্বব্যাংক-আইএমএফের বার্ষিক সভায় বাংলাদেশের জন্য অতিরিক্ত ঋণ সহায়তার বিষয়ে আলোচনা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে এ ধরনের অর্থনৈতিক সহযোগিতা বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।
বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে আইএমএফ জানিয়েছে, এই বছরে বিশ্ব জিডিপির প্রবৃদ্ধি ৩.২ শতাংশে স্থির থাকবে এবং ২০২৫ সালের পর সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে ৩.৫ শতাংশে নেমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে বাংলাদেশের জন্য এই সময়ের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলা করা বেশ কঠিন হতে পারে।
এর আগে, বিশ্বব্যাংক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকও (এডিবি) বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি কমার পূর্বাভাস দিয়েছিল। গত মাসে এডিবি জানিয়েছিল, চলতি অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫.১ শতাংশে নেমে আসবে। এর মাধ্যমে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, দেশের অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতার জন্য আরও কার্যকর পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা প্রয়োজন।
আইএমএফের প্রতিবেদনে বাংলাদেশ সম্পর্কে আলাদাভাবে বিশ্লেষণ বা পর্যালোচনা দেওয়া না হলেও, সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির এই পতন এবং মূল্যস্ফীতির বৃদ্ধি বাংলাদেশের জন্য এক গুরুতর চ্যালেঞ্জ হিসেবে রয়ে গেছে।
বায়ান্ন/এএস