কুষ্টিয়া জেলার সবজি বাজারের দাম উঠানামা করলেও, চাউলের বাজার শুধুই ঊর্ধ্বমুখী। বিশেষ করে, খাজানগর মোকামে গত ১৫ দিনে তিন দফায় পাঁচ টাকা চাউলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে।
মিল মালিকরা দাবি করছেন, ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আবারও দাম বাড়ানোর সম্ভাবনা রয়েছে। তাদের মতে, মিলগেটে ধানের দাম বৃদ্ধি এই দাম বৃদ্ধির প্রধান কারণ।
বর্তমানে, কুষ্টিয়ার খাজানগর মোকামে মিনিকেট চালের প্রতি বস্তা (২৫ কেজি) দাম ১,৭২৫ টাকা, যা প্রতি কেজিতে ৬৯ টাকার সমান। মিলগেট থেকেই প্রতি কেজি মিনিকেট চাল ৭২ থেকে ৭৪ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাজানগর মিনিকেট চালের জন্য দেশের মধ্যে পরিচিত। এখানে ৬৪টি চালকল রয়েছে এবং প্রতিদিন শতাধিক ট্রাক মিনিকেট চাল ঢাকাসহ দেশের ৩৫ জেলায় সরবরাহ করা হয়। মিল মালিকরা জানাচ্ছেন, গত আগস্ট মাসে মিনিকেট চালের প্রতি কেজি দাম ছিল ৬৭ টাকা, যা অক্টোবর মাসে ৬৬.৫ টাকায় নেমে আসে। তবে, চালের চাহিদা বাড়ায় দাম আবারও বেড়েছে।
গোল্ডেন রাইস মিলের মালিক জিহাদুজ্জামান জিকু জানান, এক সপ্তাহের ব্যবধানে মিনিকেট চাল উৎপাদনে ব্যবহৃত ধানের দাম মণপ্রতি ৩৩০ টাকা বেড়েছে। এক সপ্তাহ আগে ১,৫০০ টাকায় যে ধান কিনছিলাম, এখন তা ১,৮০০ টাকায় কিনতে হচ্ছে, তাই বাধ্য হয়ে চালের দাম বাড়াতে হয়েছে।
কুষ্টিয়া পৌর বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিলগেটের চেয়ে খুচরা বাজারে গড়ে দুই টাকা দাম বেড়েছে।
শাপলা স্টোরের মালিক ইমরান হোসেন বলেন, মিল মালিকরা প্রশাসনিক নজরদারির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তিনবার দাম বাড়িয়েছে।
ক্রেতা বিজয় শর্মা জানান, আমনের ভরা মৌসুমে দাম বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। সরকার এবং খাদ্য প্রশাসন যদি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করত, তবে মিল মালিকেরা এমন দামের বাড়ানোর সাহস পেত না।
বাজারে চালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিলমালিক সমিতির কুষ্টিয়ার সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদীন প্রধান বলেন, ধানের দাম বাড়ছে, তাই চালের দামও বাড়ছে। আগামী দিনে দাম আরও বাড়তে পারে। ধানের বাজারে প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো প্রয়োজন।
কৃষি বিপণন কর্মকর্তা সুজাত হোসেন খান জানান, এবারের ধানের ফলন কম হওয়ায় কিছুটা ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তবে কিছু মিল মালিকেরা করপোরেট চাল কোম্পানির সঙ্গে মিলে দাম বাড়াচ্ছেন। এ বিষয়ে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, চালের দাম বাড়ানোর বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। যারা যৌক্তিক কারণ ছাড়া দাম বাড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠকও করা হয়েছে।