জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার ওরফে লজিককে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। রোববার (২২ অক্টোবর) রাত পৌনে ৯টার দিকে মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদ থেকে তাকে আটক করা হয়।
পিবিআই বলছে, জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যা মামলার এক নম্বর আসামি থাকায় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। তবে ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না– এ বিষয়ে সোমবার সকালে সিদ্ধান্ত জানাবে পিবিআই।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন পিবিআই বগুড়ার পুলিশ পরিদর্শক জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, ২০১৯ সালে জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে মাত্রাই এলাকায় একটি হত্যাকাণ্ড ঘটে। ওই মামলার আসামি ছিলেন আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার লজিক। মামলাটি তদন্ত করে থানা পুলিশ ও সিআইডি লজিকসহ তিন জনকে অব্যাহতি দিতে আদালতে প্রার্থনা জানিয়ে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ওই মামলার তদন্ত পায় পিবিআই। মামলার আসামি লজিককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
জানতে চাইলে জাহিদ হোসেন বলেন, তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হবে কি না তা সোমবার (২৩ অক্টোবর) সকালে এসপি (পিবিআই বগুড়া) স্যার বিস্তারিত জানাবেন।
পিবিআই ও মামলার নথি সূত্রে জানা গেছে, জমি সংক্রান্ত জেরে ২০১৯ সালের ৭ আগস্ট সকাল ৯টায় মাত্রাই এলাকায় মোজাহার আলী সরদার ও নুরুন্নবীদের মধ্যে মারধরের ঘটনা ঘটে। ওই সময় খোতেজা বেগম নামে এক নারীর মাথায় কোদাল দিয়ে আঘাত করলে তিনি গুরুতর আহত হন। এসময় তার ছেলে লুৎফর রহমান এগিয়ে এলে তাকেও আঘাত করা করা হয়। পরে দুজনকে কালাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক খোতেজাকে বগুড়া হাসপাতালে রেফার্ড করেন। বগুড়া শহীদ জিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে দুপুরে খোতেজা মারা যান। ওই ঘটনায় আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার ওরফে লজিককের হুকুমে অন্য আসামিরা মারধর করেন বলে অভিযোগ আনা হয়। এরপর নিহতের স্বামী মোজাহার আলী সরদার বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। এতে আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার ওরফে লজিককে এক নম্বর আসামি করে ১৯ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়।
মামলাটি কালাই থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোখলেছুর রহমান ও জয়পুরহাট সিআইডির ইন্সপেক্টর জিয়াউর রহমান তদন্ত করেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে ২০২১ সালের ডিসেম্বর মাসে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। অভিযোগপত্রে মামলার প্রথম তিন আসামিকে অব্যাহতি দিতে আদালতের কাছে আর্জি জানানো হয়। অব্যাহতির কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার ওরফে লজিক ও মাহমুদুন্নবী সুজন ঘটনার সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন না এবং এর সঙ্গে জড়িত নয়। আরেক আসামি মোফাজ্জল হোসেন মারা গেছেন।
মামলার বাদী মোজাহার আলী সরদার মারা যাওয়ায় আদালতের নির্দেশে তার ছেলে লুৎফর রহমান বাদী হিসেবে নারাজি দেন। এরপর মামলাটি পিবিআই বগুড়াকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। ওই মামলায় লজিককে আটক করেছে পিবিআই।