ঢাকা, বৃহস্পতিবার ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ৭ই ফাল্গুন ১৪৩১

জলকামান-কাঁদানে গ্যাসের পর পুলিশের লাঠিচার্জ, ছত্রভঙ্গ চাকরিপ্রার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক | প্রকাশের সময় : রবিবার ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ০৭:২৬:০০ অপরাহ্ন | জাতীয়

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ বাতিল হওয়া প্রার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে পুলিশের কঠোর হস্তক্ষেপ। জলকামান ও কাঁদানে গ্যাসের পর লাঠিপেটায় ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে আন্দোলনকারীদের।

রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে শাহবাগে মহাসমাবেশ শেষে বিকেলে সচিবালয় অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করলে পুলিশের বাধার মুখে পড়েন চাকরিপ্রার্থীরা। বাধার মুখে তারা সেখানেই অবস্থান নিলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।

প্রথমে জলকামান ও কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের সরানোর চেষ্টা করে পুলিশ। কিন্তু তারা অনড় থাকলে একপর্যায়ে লাঠিচার্জ শুরু হয়। এতে অনেক আন্দোলনকারী আহত হন এবং দিগ্বিদিক ছুটোছুটি করতে বাধ্য হন।

আন্দোলনকারীদের একজন, ফাতেমা বলেন, 'আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ অযথা বাধা দিয়েছে। জলকামান ছুড়েছে, লাঠিচার্জ করেছে। আমরা শুধু আমাদের ন্যায্য অধিকার চাইতে এসেছি, এর জন্য এত দমন-পীড়ন কেন?'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক আন্দোলনকারী বলেন, 'আমরা বৈধ পরীক্ষার মাধ্যমে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছি। তারপরও ১১ দিন ধরে রাস্তায় আন্দোলন করতে হচ্ছে, পুলিশের লাঠির আঘাত সইতে হচ্ছে। এত বড় অন্যায়ের কি কোনো জবাব নেই?'

এর আগে ১০ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের জলকামান নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। পরদিন, ১১ ফেব্রুয়ারি, চাকরিপ্রার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এবং মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে বৈঠক করে।

সরকার তাদের নিয়োগের বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেছে এবং কাউকে বাদ না দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

একজন আন্দোলনকারী বলেন, 'আদালতের রায় সংশোধন না হলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না। এটা আমাদের জীবনের লড়াই।'

এদিকে পুলিশের কঠোর অবস্থানের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা চলছে। নাগরিক সমাজ ও মানবাধিকার কর্মীরা বলছেন, একটি যৌক্তিক আন্দোলনে এভাবে বলপ্রয়োগ গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ণ করে।

এই পরিস্থিতিতে উচ্চ আদালত ও সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের দিকেই তাকিয়ে আছেন চাকরিপ্রার্থীরা। 

বায়ান্ন/আরএস