জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশ পিরোজপুর জেলার শাখার সকল রুকনদের নিয়ে রুকন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮.০০ ঘটিকায় পিরোজপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জেলা জামায়াতের রুকন সম্মেলন শুরু হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় শূরা সদস্য ও জেলা আমীর অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ ও সঞ্চালনা করেন পিরোজপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মো. জহিরুল হক।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াত ইসলামী বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল ও নির্বাহী কমিটির সদস্য মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডঃ মুয়াযযম হোসাইন হেলাল। সম্মেলনে দারসুল কুরআন পেশ করেন ভোলা জেলার সাবেক আমীর মাওলানা ফজলুল করিম।
এসময় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাওলানা শাহজাহান বলেন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের টার্গেট ছিল একটা আলট্রা সেকুলার রাষ্ট্র কায়েম করে বাংলাদেশকে ভারতের হাতে তুলে দেয়া। আর এ পথে প্রধান অন্তরায় ছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এবং হক্কানী ওলামায়ে কেরাম। এজন্যই ২০০৯ আওয়ামিলীগ পরিকল্পিতভাবে বিডিআর বিদ্রোহ ঘটিয়ে সেনাবাহিনীর ৫৭ জন মেধাবী অফিসারকে হত্যা করা হয়। এছাড়াও জামায়াতে ইসলামীকে নিঃশেষ করে দেয়ার জন্য জামায়াতের দেশপ্রেমিক এবং আল্লাহ ভীরু নেতৃবৃন্দকে বিচারের নামে হত্যা করা হয়। তিনি আরও উল্লেখ করেন, জামায়াতের দুইজন নেতা তিনটি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে দেশসহ সারা বিশ্বকে তাদের সততা, দক্ষতা এবং যোগ্যতার প্রমাণ দেখিয়ে দিয়েছিল। তাদেরকে কোনভাবেই দুর্নীতিপরায়ণ প্রমাণ করতে না পেরে তাদের আগামীর পথে বাধা অপসারণ এর জন্যই পরিকল্পিতভাবে হত্যার পর বেছে নেয়।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অ্যাডঃ মুয়াযযম হোসাইন হেলাল বলেন, একটি সমাজে বিপ্লবের জন্য একদল আদর্শবান মানুষের প্রয়োজন। একদল আদর্শবান মানুষ ছাড়া কোনভাবেই বিপ্লব সম্ভব নয়। এজন্য মাওলানা মওদুদী (রহ:) মাত্র ৩৮ বছর বয়সে ১৯৪১ সালে অবিভক্ত ভারত বর্ষে জামায়াত ইসলামী প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের আগেই জামায়াত একটি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য যোগ্য লোক তৈরি করার কাজ শুরু করে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণ ও লুটপাট করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে অথচ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শত জুলুম নির্যাতনের পরেও টিকে আছে। দেশ নতুনভাবে স্বাধীন হওয়ার পর অনেক রাজনৈতিক দল নির্বাচন নিয়ে তাড়াহুড়া করেছে কিন্তু এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছে। জামায়াতের ইসলামীর মূল কাজ হল মানুষের চরিত্র গঠন। জামায়াত ইসলামী রাসূল (সা:) এর অনুসৃত পদ্ধতিতে দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের চরিত্র গঠন করে প্রথমে সহযোগী কর্মী এবং পরে রুকন হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এসময় অ্যাডঃ হেলাল উপস্থিত রুকনদের সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেন।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন পিরোজপুর জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রবসহ পিরোজপুর জেলার সকল উপজেলা আমীর এবং জেলা শূরা, কর্ম পরিষদ সদস্যরা। পিরোজপুর সংস্কৃতি কেন্দ্রের শিল্পীরা অনুষ্ঠানে ইসলামী গান পরিবেশন করেন।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যক্ষ তাফাজ্জল হোসাইন ফরিদ অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতে সকলে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে সাংগঠনিক সফলতা অর্জনের চেষ্টা চালাবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।